নয়াদিল্লি: করোনা পরিস্থিতিতে দেশে কাজের সুযোগের বেহাল দশা। অর্থনীতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই দেশজুড়ে কার্যত লাফিয়ে বেড়েছে বেকারত্ব। আর তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় মঙ্গলবার কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বড়সড় ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের টুইটার হ্যান্ডেল তথা পিএমও অফিস থেকে টুইট বার্তা দিয়ে বলা হয়, ১৮ মাস অর্থাৎ আগামী দেড় বছরের মধ্যে ১০ লাখ কর্মী বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ করা হবে। এর সঙ্গেই জানানো হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই সরকারি সমস্ত দপ্তর এবং মন্ত্রকে নিজেদের মানবসম্পদের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। খুব শীঘ্রই সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে বাকি থাকা শূন্যপদ গুলিতে কর্মী নিয়োগের কাজ শুরু হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, প্রতিটি মন্ত্রক এবং বিভাগগুলোতে দক্ষ কর্মী নিয়োগ করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাজের ধরন বুঝে নিযুক্ত কর্মীদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের একটি নামও দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৮ মাসের এই কর্মসংস্থান প্রকল্পকে ‘মিশন মোড’ নামে অভিহিত করেছেন মোদি।
উল্লেখ্য প্রায় আড়াই বছর ধরে করোনার তাণ্ডবে দেশের আর্থিক মন্দার পাশাপাশি বেকারত্বও যে কার্যত লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে তা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছে একাধিক সমীক্ষা এবং গবেষণার রিপোর্ট। মহামারীকালে আগে থেকেই আশঙ্কা করা হয়েছিল যে, দেশে কর্মসংস্থানের হার লকডাউনের হাত ধরে উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছতে পারে। আর সেই আশঙ্কাই সত্যিতে রূপায়িত হয়েছে। এমতাবস্তায় কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তকে অনেকের সাধুবাদ জানালেও বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে আগামী তথা ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের মাস্টার স্ট্রোক হিসেবেই দেখছেন। বিরোধীদের একাংশের দাবি, এর আগেও বহু গালভরা দাবি করে কেন্দ্রের ক্ষমতায় টিকে থেকেছেন মোদি তথা পদ্ম বাহিনী। কিন্তু তার একটাও বাস্তবায়িত হয়নি। এবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দপ্তরের তরফ থেকে এই টুইট বার্তায় পরেই তাই কটাক্ষের সুরে কংগ্রেস দলের মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা টুইটে লেখেন, ‘কর্মসংস্থানের নিরিখে এই মুহূর্তে সব থেকে খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলছে দেশ। মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি গত ৭৫ বছরের মধ্যে সবথেকে বেশি। আর এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শুধু ‘টুইটার টুইটার’ খেলছেন।’
উল্লেখ্য করোনাকালে ভারতের বহু শহরে বেকারত্বের হার চলতি বছরের এপ্রিল এবং জুন মাসে এক লাফে ১২.৬ শতাংশ হয়েছে বলে খবর। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরেই বেকারত্ব নিয়ে মোদি সরকারকে একের পর এক প্রশ্ন বিদ্ধ করেছেন দেশের আর্থিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। আর তাই আগামী লোকসভা নির্বাচনের ভোট ব্যাংকে প্রভাব ফেলতেই দেশের কর্মসংস্থানকে কাজে লাগা লাগাচ্ছেন মোদি, এমনটাই দাবি বিরোধীদের।