কলকাতা: করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে মাঝেই রাজ্যের গনবণ্টন ব্যবস্থা নিয়ে কঠোর বিরোধীতার মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠির বিষয় বন্তু ছিল কোভিড-১৯।
সোমেনবাবু লিখেছেন, রেশনে প্রতি মাসে পরিবার পিছু পাঁচ কেজি চাল বা আটা দেওয়ার পদ্ধতি বদল হোক। বদলে প্রতি সপ্তাহে পাঁচ কেজি চাল বা আটা দেওয়া হোক। এছাড়া, পরিযায়ী শ্রমিকরা অন্য জেলায় আটকে পড়ে রয়েছে। তাঁদের রোজগার নেই। এরাজ্যে তাঁদের পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করে রেশন এবং সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হোক। সোমেনবাবুর বক্তব্য, যাদের রেশন কার্ড নেই তাঁদেরও রেশন দেওয়া হোক। সুস্থ ভাবে বিকল্প কুপন বা কার্ড বন্টন করা হোক। সমস্ত স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের কর্মীদের নিয়ে এলাকাভিত্তিক কমিটি তৈরি হোক।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও রাজ্যের গনবণ্টনকে ঠিক রাখতে রেশনে স্বচ্ছতা রাখতে পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি এও বলেছিলেন, যার দরকার তাকেই রেশন দিতে হবে। কার্ড দেখার দরকার নেই। কেরালার মত প্যাকেট সিস্টেম করার আহ্বান যাবেন সূর্যবাবু। তিনি বলেন বিতরণের লোক কম পড়লে পার্টি কর্মীরা এগিয়ে আসবেন। তিনি বলেছেন, “খাবার না থাকলে গরিব মানুষ লকডাউন মানবে না। যত নিরাপদ জায়গাতেই থাকুন, যদি ব্যাপক মানুষের নিরাপত্তা না থাকে, তবে তারা অভুক্ত থাকলে, অনাহারে মৃত্যুর আগে লকডাউন'টা ভেঙে দেবে।” সূর্যকান্তবাবুর মতে, “এটা বুঝতে হবে, আমি মরতে যাচ্ছি না খেতে পেয়ে, আইন আমার জন্যে? লকডাউন আমার জন্যে? নাকি যার খাবার আছে তার জন্যে? লকডাউন থাকবে না এই রকম হলে।”
সিপিএম পরিষদীয় দলের সদস্য সুজন চক্রবর্তী সম্প্রতি বলেছেন, “রেশন নিয়ে দিল্লির ঘোষণা এন এফ এসে'র বাইরে পাঁচ কেজি করে চাল, গম বা আটা। চিনি ১ কেজি, দু রকমের ডাল এক কেজি। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা। রাজ্য সরকার ঘোষণা ৫ কেজি চাল অথবা আটা। আলু (পরে যদিও বন্ধ)। এটা রেশন নাকি রেশনের বাইরে? তাহলে কেন্দ্র রাজ্য মিলে ১০ কেজি চাল অথবা আটা, ২ কেজি ডাল, ১ কেজি চিনি। কিন্তু তা হচ্ছে কী? প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী মিলে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের একটি পরিবারও পেয়েছে?”
রেশন নিয়ে রাজ্যে চলতি বিতর্কে, বিরোধী বাম-কংগ্রেস রাজ্য সরকার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিজেপি নেতা দেবজিত সরকার অভিযোগ করেছে, “তৃণমূল নেতারা রেশন সিজিনিয়ে নিয়ে বেশি দামে বিক্রি করছে। আর বাকিটা মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বসিয়ে ত্রাণ হিসেবে চালাচ্ছে। যে চাল দেওয়া হচ্ছে তা কি মুখে দেওয়া যায়?” এর মাঝেই কেন এক মাসের বদলের রাজ্যের মানুষ ১৫ দিনের রেশন পেলেন প্রশ্ন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। তিনি খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ধমক দিয়েছেন, খাদ্য সচিবকে সরিয়ে দিয়েছেন।