কলকাতা: বিষয়, কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। প্রশাসন সূত্রে যা খবর, প্রশাসক হবেন, বর্তমান মেয়র। স্বয়ং ফিরহাদ (ববি) হাকিম'ই মেয়র হতে চলেছেন।
প্রসঙ্গক্রমে, বিজেপি'র রাজ্যসভার সাংসদ এবং প্রবীণ সাংবাদিক স্বপন দাশগুপ্ত টুইট করে জানিয়েছেন, “কলকাতা পুরসভা এবং অন্য ৯৩টি পুরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৭মে ২০২০। কিন্তু সেই জায়গাগুলিতে সরকারি আধিকারিককে দায়িত্ব না দিয়ে প্রশাসক পদে তৃণমূল নেতাদের বসতে চায় সরকার। ২০২১-এর পর বিরোধী আসনে বসবে তৃণমূল। সেদিকে খেয়াল রেখেই জীবনের মতো রসদ সংগ্রহ করতে চায় তারা।” স্বপনবাবুর মন্তব্যেই ইঙ্গিতটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
পুরভোট করতে হবে। বিরোধীরা চাপ তৈরি করতে শুরু করেছিল অনেকদিন আগের থেকেই। মুকুল রায়ের নেতৃত্বে বিজেপির প্রতিনিধি দল রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে একাধিকবার দস্তক দিয়েছেন। রবিন দেবের নেতৃত্বে বাম প্রতিনিধি দল এবং কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলও সেখানে গিয়েছে। পরিস্থিতি এমন তৈরি হয়েছিল যে, রাজ্য সরকারকে ভোট করতেই হত। কিন্তু, তার মধ্যেই উদ্ভূত হয় করোনা পরিস্থিতি। অভিযোগ, করোনা পরিস্থিতিকে ঢাল করেই ভোট থেকে দূরে সরে যেতে পেরেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। বর্তমান পরিস্থিতিতে ২০২১ সালে মহা গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচনের আগে কী পুরভোটে সম্ভব, এখন সেটাই বড় প্রশ্ন।
রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকাকালীন কলকাতা পুরসভায় একবার প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছিল। সেই সময় পুরমন্ত্রী ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সময় এবং দল পরিবর্তনে তিনি এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেবিনেটের পঞ্চায়েত মন্ত্রী। কলকাতার প্রাক্তন মেয়রও বটে। তবে, ১৯৮৫ সালের পর আর প্রশাসক বসেনি ঐতিহ্যবাহী কলকাতা পুরসভায়। বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসে। তৈরি হয় নতুন কলকাতা পুরসভা আইন। প্রথম নির্বাচিত মেয়র হন কমল বসু। অনেকেই বলছেন, কলকাতা পুরসভার আইনে প্রশাসক বসানোর কোনও উল্লেখ নেই। কিন্তু, রাজ্যের municipal act বা পুর আইনে প্রশাসক বসানোর সংস্থান রয়েছে।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বলেছেন রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানান, “সরকারি বিজ্ঞপ্তি বেরবে। বিজ্ঞপ্তি বেরিয়ে গেলে যে নির্দেশ আসবে, সেই নির্দেশ আমরা পালন করব।” তিনি আরও জানান, “শুনলাম এ জি'র (এডভোকেট জেনারেল) এর কাছ থেকে চিফ সেক্রেটারি'র কাছে গেছে। ওরা যেরকম অর্ডার বার করবে, সেরকম করব। আমি নিজেকে নিজে প্রস্তাব করতে পারিনা।”
রাজ্যে একাধিক পুরোবোর্ডে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। এবার ৯৩টি পুরসভায় প্রশাসক বসিয়ে কাজ চালানো পথে এগিয়ে চললো রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, নবান্ন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি সময়ের অপেক্ষা। রাজ্যে বাম পরিষদীয় দল নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, “দের বছর আগে যেসব পুরসভার ভোট হওয়ার কথা ছিল, সেগুলোই হয়নি, এই সরকারের ভোট না করার একটা প্রবনতা রয়েছে।”