হিংসা একমাত্রা সমাধান, দিলীপকে ‘তালিবান’ খোঁচা ফিরহাদের

হিংসা একমাত্রা সমাধান, দিলীপকে ‘তালিবান’ খোঁচা ফিরহাদের

কলকাতা: করোনা মহামারীর আবহে ২১-এ বাংলা দখলের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি৷ খোদ অমিত শাহাকে দিয়ে সেই পর্বের উদ্বোধন করে নিয়েছে বঙ্গ বিজেপি শিবির৷ লক্ষ্য যে ২০২১-এর নির্বাচন, তা এখন থেকেই রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বের ভাষায় কার্যত স্পষ্ট৷ বাংলা দখল করতে গেলে যে ‘শক্তি’ কাজে লাগাতেই হবে তা বিলক্ষণ জানেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা৷ আর সেই লক্ষ্যে আগেই দিলীপ ঘোষ জানিয়েছিলেন, ‘বদলাও হবে, বদলও হবে৷’ দিলীপের এই মন্তব্য নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি৷ এবার সেই বিতর্কের মাত্রা আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিয়ে ‘হিংসা’র পক্ষে ফের সওয়াল করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি৷ পাল্টা দিয়েছে বিজেপিকে জঙ্গিদের সঙ্গে তুলনা করেছেন ফিরহাদ হাকিম৷ তৃণমূল-বিজেপিকে ‘বদলা’ কটাক্ষ সুজনের৷

যোগ দিবসে ফের দিলীপ ঘোষের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷ সরাসরি হিংসার পক্ষে সওয়াল কররে দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘আমি কোথায় হিংসা করতে বললাম৷ হিংসার প্রতিরোধে কেউ যদি ভাবে মন্ত্র জপ করলে হয়ে যাবে, তাঁকে লোকে কাপুরুষ ভাববে৷ নির্বোধ ভাববে৷ তাহলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যুদ্ধ করে ভুল করেছেন? তাহলে তো হরিনাম সংকীর্তন করা উচিত ছিল৷ যাঁরা কাপুরুষ, তাঁরা ক্ষমার কথা বলে৷ হিংসা ছাড়া পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত কোনও সমাধান হয়নি৷ আজ চিনের সঙ্গে হিংসা হয়েছে, আমরা যদি চিনকে ভাই ভাই বলি, তাহলে দেশটা আরো খানিকটা নিয়ে নেবে৷ কারণ যারা যে ভাষা বোঝে, তার সঙ্গে সেই কথা বলাটাই উচিত৷ যে পারে না, সে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়৷’’

অন্যদিকে থানা জ্বালিয়ে দেওয়ার মন্তব্যে নিজের অবস্থান থেকে সরতে নারাজ বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু৷ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর দাবি, ‘‘আমি যদি ওখানে (দাঁতন) না থাকতাম তাহলে ওখানে যত পুলিশ আছে, তাঁদের জনতা পিটিয়ে মেরে দিত৷ আর যত পুলিশের গাড়ি আছে সব ভাঙ্গা হত৷ আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বলেছি, পুলিশকে মারবেন না৷ আচ্ছা আপনারা বলুন, মানুষ আর কতদিন সহ্য করবে? আমাদের কোনও নেতাকে যদি কেউ নিশংসভাবে মারধর করে, আর আমাদের দলের লোককে যদি গ্রেপ্তার করবে মিথ্যা অভিযোগে৷ এর পর যদি কেউ মারা যায়, তাহলে থানা জ্বালিয়ে দেবে না তো আর কী করবে? পুলিশের থানা এখন পার্টি অফিসে পরিণত হয়েছে৷ দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দিচ্ছে পুলিশ৷’’ সায়ন্তনের এই মন্তব্যের পর স্বতপ্রণোদিত মামলা দায়েক করেছে দাঁতন থানার পুলিশ৷

বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম৷ জানিয়েছেন, ‘‘আইন অনুযায়ী প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত৷ এই বিজেপি সন্ত্রাসবাদীর দল৷ তালিবানদের যেমন অন্য কোন শিক্ষা নেই, তারা সন্ত্রাস করতে জানে, জইশে মুহাম্মদ যেমন সন্ত্রাস করতে জানে, মানুষকে খুন করতে জানে, এদেরও সেইরকম শিক্ষা৷ এরা সন্ত্রাস৷ এদের বাংলায় ঠাঁই দিতে দেবেন না৷ এরা বাংলাটাকে সর্বনাশ হয়ে যাবে৷’’  তৃণমূল-বিজেপি এক বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ করেছেন বাম পরিষদীয় দল নেতা সুজন চক্রবর্তী৷ জানিয়েছেন, ‘‘তৃণমূল বলেছিল, বদলা নয় বদল চাই৷ কিন্তু সরকারে আসার পর বদলা নিয়েছিল তৃণমূল৷ তৃমণূলের যে বাহিনী বদলা নিয়েছিল, আজ তারা দিলীপ ঘোষের বাহিনীতে যোগ দিয়েছে৷ বদলা দেওয়ার ক্ষেত্রে দুই দল এক৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × three =