নয়াদিল্লি: বেজে গিয়েছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দামামা৷ সর্বসম্মতভাবে যশবন্ত সিনহার নামে সিলমোহর দিয়েছে বিরোধীরা। মঙ্গলবার দুপুরে দিল্লিতে এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের বাড়িতে ১৮টি দলের বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলন করে সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন বিরোধী নেতারা। পওয়ার বলেন, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ শিবিরের সর্বসম্মত প্রার্থী হবেন যশবন্ত সিনহা।’’ এদিন পওয়ারের বাসভবনে আয়োজিত বৈঠকে তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসেবে হাজির ছিলেন, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হয়েই মন্দিরে দ্রৌপদী, ঝাঁটা হাতে করলেন মন্দির চত্বর সাফাই, ভিডিয়ো ভাইরাল
এদিকে, রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার আগেই মঙ্গলবার সকালে টুইট করে ‘দেশের বৃহত্তর স্বার্থে’ তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন যশবন্ত৷ দুপুরে বিরোধী জোটের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করা হয় তাঁর নাম৷
১৯৩৭ সালের ৬ নভেম্বর বিহারে জন্ম যশবন্ত সিনহার। পাটনার স্কুল এবং কলেজেই পড়াশোনা তাঁর। ১৯৫৮ সালে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন৷ ১৯৫৮ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ওই প্রতিষ্ঠানেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপনা করেন যশবন্ত। ১৯৬০ সালে ভারতীয় প্রশাসনিক পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হন৷ বিহার সরকারের অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়-সহ বিভিন্ন শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত জার্মানিতে ভারতীয় দূতাবাসে প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) এবং ১৯৭৩ সালে ফ্রাঙ্কফুর্টে কনসাল জেনারেল নিযুক্ত হন।
একজন আইএএস অফিসার হিসাবে কেরিয়ার শুরু করা সেই আমলাই ১৯৮৪ সালে জনতা দলের হাত ধরে সক্রিয় রাজনীতির দুনিয়ায় পা রাখেন। ১৯৯০ সালে চন্দ্রশেখর সরকারের অর্থমন্ত্রীও ছিলেন৷ এর পর গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। জনতা পার্টি ভাঙার পর বাজপেয়ীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি বিজেপি’তে যোগ দেন৷ একসময় বিজেপির মুখপাত্রও ছিলেন যশবন্ত।
অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় সামলেছেন অর্থ এবং বিদেশমন্ত্রকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব৷ কিন্তু ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের হাতে দলের রাশ যেতেই বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তাঁর৷ ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে মোদী-শাহের বিরুদ্ধে রীতিমতো প্রচার চালিয়েছিলেন তিনি৷ প্রচার করেছিলেন এ রাজ্যেও৷ সেই সময় স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ‘‘২০১৯-এ আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চাই৷’’ এর পর ২০২১ সালে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন যশবন্ত সিনহা৷ তিনি ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি৷ তৃণমূলের সদস্য হলেও কমবেশি প্রায় সব বিরোধী দলের সঙ্গেই সুসম্পর্ক ছিল প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রীর। সেকারণেই তৃণমূল নেত্রী যখন রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে যশবন্ত সিনহার নাম প্রস্তাব করেন, তখন একবাক্যে তাঁকে সমর্থন করেন বিরোধীরা।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>