ওয়াশিংটন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানের জাত শত্রু, সৌজন্যে হিরোসিমা নাগাশাকির সেই ভয়াবহ পারমাণবিক বিস্ফোরণ। সাতটি দশক পেরিয়ে গেলেও সেই ক্ষত আজও দগদগে, তাই আমেরিকার বন্ধুত্বপূর্ণ আবেদনও জাপানকে ভাবায়। বিস্ফোরণের জের এখনও টানছে এই দুই শহর। সেখানকার বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই বিকলাঙ্গ, এ সভ্যতার অভিশাপ। তাইতো পরমাণু বিস্ফোরণ নিয়ে আলোচনা হলেই আন্তর্জাতিক বিশ্ব রে রে করে ওঠে। এমন ভয়াবহতা দেখার কোনওরকম সাধ যে কারোর নেই।তবে কী জানেন, পৃথিবীতে হিরোশিমার থেকে কয়েকগুণ বেশি ক্ষতিকারক বিস্ফোরণ ঘটে গিয়েছে গত ৩০ বছরে। এরমধ্যে সব থেকে বড় বিস্ফোরণটি গত ২০১৮-র ১৮ ডিসেম্বরে ঘটল। যার ভয়বহতা মাপলে শিহরণ খেলে যায় শরীরে।
রাত ১১.৫০ মিনিট নাগাদ রাশিয়া ও আলাস্কার মধ্যবর্তী বেরিং সাগরের উপরে আছরে পড়ে এক বিশাল উল্কাখণ্ড।গত ৩০ বছরের মধ্যে এটিই ছিল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিস্ফোরণ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৩-র চেলিয়াবিনস্ক অগ্নিগোলকের পরে এত বড় বিস্ফোরণ আর ঘটেনি।তীব্রতার বিচারে এই বিস্ফোরণটি হিরোসিমার হাইড্রোজেন বোমার থেকে অন্তত দশগুণ বেশি শক্তিশালী ছিল। উল্কাখণ্ডটি সাগরে পতিত হওয়ায় বিরাট গর্ত তৈরি হলেও স্থলভূমিতে এই পতনের তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া ঘটেনি, যারফলে লোকচক্ষুর অন্তরালেই থেকে গিয়েছে এ শতাব্দীর ভয়াবহ বিস্ফোরণ। বলাবাহুল্য, নাসার মতো মহাকাশ গবেষণা সংস্থাও এই উল্কাখণ্ড পতনের আঁচ পায়নি।
তবে সম্প্রতি এহেন বিস্ফোরণের খবর টুইটারে শেয়ার করেছেন কানাডার পশ্চিম অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার ব্রাউন। ছবিও পোস্ট হয়েছে, সেখানেই জানা গিয়েছে পতিত উল্কাখণ্ডটির পতনের জেরে যে শক্তি নির্গত হয়েছে তা পরিমাপ করলে ১৭৩ টন ছুঁয়ে ফেলবে। খণ্ডটি চওড়ায় ১০ মিটার ও ওজনে দেড় হাজার টন প্রায়।যদি বেরিং সাগর বাদ দিয়ে এটি কোনও লোকালয়ে পড়ত তাহলে পৃথিবীর স্থলভাগের ভারসাম্য নষ্ট হত সন্দেহ নেই।