দেবময় ঘোষ: বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে, ঝুলন্ত দেহ। বিজেপি কর্মীদের অস্বাভাবিক মৃত্যু মিছিলের নতুন সংযোজন – হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়। বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে সোমবার সকালে। দেবেন্দ্রনাথের পরিবারের দাবি, রবিবার রাত একটা নাগাদ কয়েক জন বাইক আরোহী বিধায়ককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। সোমবার সকালে তাঁর বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে একটি বন্ধ দোকানের সামনে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখা যায়। তবে ঠিক যেভাবে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছে – তা যথেষ্টই সন্দেহজনক বলে মনে হয়েছে পরিবারের। বাঁ-হাত ও গলা দড়ি দিয়ে বাঁধা। দড়িটি উপরে দোকানের চালের বাঁশের সঙ্গে ঝুলছে।
হেমতাবাদের বিধায়কের দেহটির সঙ্গে কাকতলীয় ভাবে আরও দু-তিনজন বিজেপি কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর আশ্চর্য সামঞ্জস্য রয়েছে। আলোচনায় উঠে এসেছে পুরুলিয়ার ত্রিলোচন মাহাতো এবং দুলাল কুমারের নাম। দুজনেই তরুণ বিজেপি কর্মী ছিলেন। ২০১৮ সালে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগের এই দুই কর্মীর ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। ত্রিলোচন মাহাতো'র দেহ গাছের সঙ্গে ঝুলছিল। শরীরে পোস্টার সাঁটা। হুমকি – 'বিজেপি পার্টি' করার অপরাধে খুন। দুলাল কুমারের মৃতদেহ ঝুলছিল হাইটেনশন পোল থেকে। যদিও তার শরীরে কোনও প্রচ্ছন্ন হুমকির বার্তা ছিল না। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে পুরুলিয়ায় শিশুপাল সহিস নামে এক বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। এই প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুলিশের প্রাথমিক বক্তব্য ছিল – ঘটনাটি আত্মহত্যা। ত্রিলোচন মাহাতো এবং দুলাল কুমারের মামলা সুপ্রিম কোর্টে রয়েছে।
পুলিশের বক্তব্য, হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের পকেট থেকে সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। তাতে দুই ব্যাক্তির নাম আছে। এক বিধায়ক পকেটে দুই ব্যাক্তির নাম লিখে কেন আত্মহত্যা করতে গেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রাজ্য বিজেপি হেমতাবাদের বিধায়কের অস্বভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে খুন বলে দাবি করেছে। ঘটনার সিবিআই তদন্ত চাওয়া হয়েছে। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, “দেবেন্দ্রনাথ রায়কে দেখে মনে হচ্ছে না তিনি আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন। এর আগেও আমরা পুরুলিয়ার দেখেছি একাধিক (বিজেপি কর্মী) যুবককে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।”