‘বাংলা-জয় সহজ নয়’, মুকুলে বিরাগভাজন বিজেপি! বাংলায় ফিরে কী বার্তা গেরুয়া নেতার?

সেখানে পেশ করা এক পরিসংখ্যান দেখিয়ে বিজেপির নেতারা দাবি করেন, বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে, ২০২১ এর নির্বাচনে বিজেপি কমপক্ষে ১৯০টি আসন পেতে পারে। সঙ্গে সঙ্গেই এই দাবির বিরুদ্ধে আপত্তি জানান মুকুল।

 

নয়াদিল্লি ও কলকাতা: এককালে দলের ‘সেকেন্ড ইন কম্যান্ড’ বলা হত তাঁকে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবর্তমানে তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে দেখা যেতে পারে বলেও মনে করেছিলেন অনেকেই৷ কিন্তু মানুষ ভাবে এক আর হয় আর এক! এহেন তৃণমূলের ‘নয়নের মণি’ মুকুল রায় সারদাকাণ্ডের পর বিজেপিতে যোগ দিলেন৷ তবে গেরুয়া দলে যোগ দিলেও শিবিরের অন্যান্য নেতাদের মতো ‘আকাশ কুসুম’ ভাবনা তাঁর নেই৷ দিল্লির বিজেপি নেতাদের তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বাংলা জয়’ অত সহ হবে না। সূত্রের খবর এরপরেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরাগভাজন হয়েছেন মুকুল৷ দিল্লির বৈঠকের মাঝে কলকাতায় ফিরে এবার সমস্ত জল্পনার জবাব দিলেন মুকুল রায়৷

দিল্লির বৈঠক ফেলে কলকাতায় ফিরছেন মুকুল৷ অপমানিত বোধ করেই কি মুকুল ফিরছেন কলকাতায়? তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, কলকাতা ফেরার কারণ চিকিৎসা। তাঁর কথায়, ‘অনেকদিন ধরেই চোখের সমস্যায় ভুগছি। যে চিকিৎসক আমাকে দেখেন, তিনি সময় দিয়েছেন শুক্রবার। তাই কলকাতায় ফিরছি। আজকেই ফিরতাম কিন্তু ফ্লাইটের টিকিট পাইনি।’ বিমানবন্দর থেকে মুকুল রায়ের মন্তব্য, ‘‘আমার চোখে রেটিনাতে ইনজেকশন দেওয়ার ব্যাপার রয়েছে৷ সেই ডেডটি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে৷ তাই আমি চলে এসেছি৷ এছাড়া আর কিছুই নয়৷ এটা নিয়ে কোনও জল্পনা হওয়ার কোনও সুযোগ নেই৷ ২০২১ সালে নির্বাচন রয়েছে৷ দল নিশ্চিত, তার সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবে৷ নির্বাচনও হবে৷’’ এক সময় এ রাজ্যের প্রতিটা কোনা নিজের নখদর্পণে রাখতেন মুকুল রায়। তাঁর সাংগঠনিক ক্ষমতা দেখেই সানন্দে দলে নেয় বিজেপি।

আরও পড়ুন: তৃণমূলের গুরুদায়িত্বে বাম-কংগ্রেসের ঋতব্রত-ওমপ্রকাশ! প্রাক্তন তৃণমূলীরাও এখন ‘বিশুদ্ধ বিজেপি’

বুধবার, বিজেপির ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের রণকৌশল কী হবে তা নিয়ে আলোচনা করার জন্য দিল্লিতে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা ছিল মুকুলে’র। তাই দিল্লি রওনা হয়েছিলেন কথামতোই। সেখানে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গী’র বাড়িতে এক প্রস্তুতি বৈঠকে যোগ দেন মুকুল। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই বৈঠকেই তাল কেটেছে বিজেপি-মুকুলের।

আরও পড়ুন: তৃণমূলের ২১-এর সমাবেশ ‘প্রহসন’ দিবস হিসাবে পালিত হবে: দিলীপ

সেখানে পেশ করা এক পরিসংখ্যান দেখিয়ে বিজেপির নেতারা দাবি করেন, বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে, ২০২১ এর নির্বাচনে বিজেপি কমপক্ষে ১৯০টি আসন পেতে পারে। সঙ্গে সঙ্গেই এই দাবির বিরুদ্ধে আপত্তি জানান মুকুল। তিনি বলেন, খাতায় কলমে বাংলা জয় সহজ বলে মনে হলেও, আসলে কাজটা বহুগুণ কঠিন। এই পরিসংখ্যানের সঙ্গে বাস্তব চিত্রের কোনও মিল নেই বলেও দাবি করেন মুকুল। তাঁর এই মন্তব্য ভালো ভাবে নেয়নি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একটা বড় অংশ। এখানেই তৈরি হয় ফাটল।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিলীপ ঘোষের বাড়িতে আয়োজিত বৈঠক থেকেও নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন মুকুল। দিল্লিতে রণকৌশল সভায় কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমান বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়ে’র যোগদানের বিষয়ে মুকুলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ‘শোভনদার ব্যাপারটা আমি কিছু জানি না। আমার সঙ্গে কথা হয়নি। তাছাড়া আমি জানি না কোন মিটিংয়ের জন্য কে ডেকেছে। এই মিটিংয়ে আমি এলিজিব্ল নই। এখানে আমাকে ডাকাও হয়নি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *