বিশেষ প্রতিবেদন: বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে নিয়ে গুঞ্জন থেমেছে। কিন্তু কিছু প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। মুকুল রায় তৃণমূলে ফেরত যাবেন, এমন খবর বাংলার সাংবাদমাধ্যমে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় কে রটিয়ে দিল? মুকুল ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে ঠেলে দিয়েছেন এমন নয়। নিজের দলের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছে, এমন অভিযোগ তিনি নিজে মুখে করতে পারবেন না, এটাই স্বাভাবিক। এটা ঠিক যে, চোখের চিকিৎসার জন্য তিনি দিল্লি থেকে ফিরে এসেছিলেন। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রায় তিন বছরের মাথায় কেন উঠল এমন অভিযোগ, তা চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন- পুলিশ-কর্তাদের সম্পত্তি হিসেব চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে টুইট রাজ্যপালের
শুরুতেই সাফ বলে রাখা ভাল, মুকুল রায়ের তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২১ শে জুলাই আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই এই জল্পনায় অংশগ্রহন করেছেন। কিন্তু বাস্তবে তা সত্য নয়। কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বাংলার ২১ নির্বাচনের স্ট্রাটেজি নিয়ে নিরন্তর আলোচনা করেছেন মুকুল। দিল্লির ওই বৈঠক রণনীতি নির্ধারণ করেছে ঠিকই, তবে তা প্রাথমিক বৈঠক। এই রকম একাধিক বৈঠক আসন্ন। তবে, এটাও ১০০ শতাংশ খাঁটি যে, রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে দুরত্ব রয়েছে মুকুলের। কিন্তু, তিনি প্রকাশ্যে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধাচরণ করতে চাননা। তা অবশ্য দিলীপ ঘোষ ও চাননা।
আরও পড়ুন- কেমন ছিল মমতার সঙ্গে রাজ্যপাল সম্পর্কের অতীত? বলছে বঙ্গ রাজনীতির ইতিহাস
কারণ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের এই মর্মে সতর্কবার্তা রয়েছে। ২১ নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপিতে কোনও ভাঙ্গন চাননা স্বয়ং অমিত শাহ। কিন্তু, কিছু তো একটা আছে, যেই কারণে কিছুটা হলেও দলের উপর খুশি নন মুকুল। অনেকেই বলছেন, তৃণমূলে থাকা কালীন রাজ্য সভার সাংসদ ছিলেন মুকুল। কিন্তু, বিজেপিতে এই তিন বছরে তিনি শুধু দলের জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। সারা ভারতের ১০০ জন সদস্যের একজন, কিন্তু কোনও সংসদীয় পদ পাননি।
আরও পড়ুন- ৩ বছরে ব্রাত্য গেরুয়া মুকুল! দু’হাত বাড়িয়ে ঘাসফুল, সময়ে সমীকরণ বদল?
পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভার সদস্য করা যায়নি মুকুলকে। কারণ, বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্য সংসদের উপরের কক্ষে গিয়েছেন। যদিও, বাংলায় বিজেপির সাফল্যের কৃতিত্ব শহীদ মিনারের সভা থেকে মুকুল রায়কে দিয়েছেন অমিত শাহ। কিন্তু, প্রশংসা ছাড়া সংসদীয় পদ বা কেন্দ্রীয় বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব কিছু পাননি মুকুল। বিজেপির অন্দরমহলের খবর, সারদার চার্জসিট থেকে অব্যাহতি চান মুকুল। কিন্তু, এই ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কিছু করার নেই। কারণ সারদার অন্যতম অভিযুক্ত মুকুল। তদন্তের নিরপেক্ষতা দেখতে মুকুলকে বাদ দেওয়া যাবে না। সিবিআই এর বিরুধ্যে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠবে। রাজ্যে বিজেপির অবস্থান তাতে সুস্থিত হবে না।