সন্ন্যাসী হিসাবে কখনওই মসজিদের শিলান্যাসে যাব না: যোগী আদিত্যনাথ

সন্ন্যাসী হিসাবে কখনওই মসজিদের শিলান্যাসে যাব না: যোগী আদিত্যনাথ

নয়াদিল্লি: ৫ আগস্ট রাম মন্দিরের শিলান্যাস সম্পূর্ণ হয়েছে। দেশজুড়ে মোদীভক্ত, হিন্দুত্ববাদী এবং আরএসএস সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। অন্যদিকে এতদিন ধরে রামমন্দিরের বিরোধিতা করে আসা লোকেরা অনেকটাই স্তিমিত। তাঁরা মানুষের দৃষ্টিকোণ ফেরাতে চেয়েছেন অর্থনীতি, করোনা, লাদাখ প্রসঙ্গে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ রাম মন্দিরকেই যে সামনের বিধানসভা ভোটে মূল হাতিয়ার করতে চলেছেন, সেকথা সাফ জানিয়ে দিলেন। 

আরও পড়ুন: রাম মন্দিরের পর এবার এক দেশ এক আইন প্রণয়নে এগোচ্ছে মোদী সরকার

যোগী জানিয়েছেন, নিজের ধর্মবিশ্বাস প্রকাশের অধিকার সবার আছে। তাই একজন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর কোনও ধর্মের প্রতি সমস্যা নেই। কিন্তু বাবরি মসজিদের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে তাঁকে ডাকা হলে, সন্ন্যাসী হিসাবে তিনি কখনওই সেখানে উপস্থিত থাকবেন না। ধর্মনিরপেক্ষ কোনও দেশের মন্দির উদ্বোধনে একজন প্রধানমন্ত্রী কিংবা মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিত থাকা উচিত কি না তা নিয়ে জলঘোলা হচ্ছিল। যোগী আদিত্যনাথ এ প্রসঙ্গে পাল্টা প্রশ্ন করেছেন, ‘যখন রাজনৈতিক স্বার্থে নেতারা মাথায় ফেজ টুপি পরে ইফতারে যান, তখন ধর্মনিরপেক্ষতার সমস্যা হয় না?’ তাঁর যুক্তি, মানুষ সব বোঝে। সংবিধানেও রাম-সীতার ছবি আছে। কংগ্রেসের উদ্দেশে যোগী বলেছেন, তাঁরা সাংবিধানিক মূল্যবোধের মানে জানে না। 

এমনই হতে চলছে ভবিষ্যতের রাম মন্দির। 

নরেন্দ্র মোদীর 'রামরাজ্যে'র স্বপ্ন বাস্তব রূপ পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২২-এর বিধানসভা নির্বাচনে রামমন্দিরের শিলান্যাসই হতে চলেছে যোগী আদিত্যনাথের সেরা অস্ত্র। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগেই রামমন্দির প্রতিষ্ঠা হয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তখন হিন্দুত্ববাদের আবেগকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দেওয়া যাবে বলেই মন্তব্য করছেন বিশেষজ্ঞরা। যোগীর মন্তব্যে এ কথার প্রমাণ মিলেছে। তিনি জানিয়েছেন, তাঁকে মসজিদের শিলান্যাসে ডাকা হবে না। যদি ডাকা হয়, তাহলে ধর্মনিরপেক্ষতাই বিপদে পড়ে যাবে। কারণ তিনি কোনও ভাবেই সেখানে উপস্থিত থাকবেন না। 

আরও পড়ুন: নগ্ন শরীরে সন্তানকে দিয়ে ছবি আঁকিয়ে মামলা, রেহানার সুপ্রিম আর্জি খারিজ

দীর্ঘদিন নিরপেক্ষতা বজায় রেখেও রামমন্দির ঘিরে হিন্দুদের আবেগের কথা বুঝতে পেরে কংগ্রেস রামনাম জপেছে। সঙ্গে যোগ দিয়েছে, এসপি, বিএসপির মতো বিরোধী দলও। কিন্তু আজ আবার তাঁরা মন্দিরের দিক থেকে জনগণের নজর ফেরাতে চেষ্টা করেছেন। কংগ্রেসের তরফে রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তুলেছেন লাদাখ ইস্যুতে। অন্যদিকে, বামেরা সরব হয়েছেন অর্থনীতি নিয়ে, আবার পি চিদম্বরম প্রশ্ন তুলেছেন কাশ্মীরে রাজনৈতিক নেতাদের বন্দি রাখা নিয়ে। বিরোধীদের সার্বিক দাবি, করোনা মোকাবিলার ব্যর্থতা ঢাকতেই বিজেপি রামমন্দিরের শিলান্যাসের উদ্যোগ নিয়েছে। যোগী পাল্টা অভিযোগ করেছেন, বাবরি বিবাদের সমাধান কংগ্রেস চায়নি, কারণ ভোটের জন্য এই বিবাদ তাঁরা সূচনা করেছিলেন।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 2 =