চিত্রকূট: মজার ছলে জ্যান্ত মাছ গেলে ফেলেছিল উত্তরপ্রদেশে চিত্রকূটের যুবক। বছর আঠারোর ওই যুবক সম্প্রতি বন্ধুদের সঙ্গে বাঁধের ধারে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। সেই বাঁধের জল থেকে ধরা একটি জ্যান্ত মাছ দাঁতে চেপে বন্ধুদের স্টান্ট দেখাতে গিয়েই বিপত্তি। হঠাৎ জ্যান্ত মাছটি পিছলে সোজা মুখে ঢুকে ওই যুবকের একেবারে পেটে চলে যায়। ফলে ঘটনাস্থলেই ভয়াবহ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে তাঁকে নিয়ে গেলেন ওঝার কাছে। যুবককে সুস্থ করতে বাড়িতেই রাতভর ধরে চলল তন্ত্রমন্ত্র, ঝাড়-ফুঁক। আর পরিবারের এই কুসংস্কারই প্রাণ কাড়ল ওই যুবকের।
মৃত এই যুবকের নাম শংকর বলে জানা যাচ্ছে। শঙ্করের পরিবারের সদস্যদের দাবি, রবিবার ওই যুবক বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বাজার থেকে সবজি কিনতে যাচ্ছে বলে। কিন্তু মাঝপথে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়ায় তিনি বন্ধুদের সঙ্গে বাজারে যাওয়ার পরিবর্তে বাঁধের জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েন। বন্ধুদের সঙ্গে মাছ ধরতে ধরতেই জ্যান্ত একটি বান মাছ হঠাৎই দাঁত দিয়ে চেপে ধরেন শংকর। তাঁর কার্যকলাপ দেখে হেসে লুটোপুটি খাচ্ছিল তাঁর বন্ধুরা। এই ইয়ার্কি, মজার মধ্যেই দাঁত থেকে মাছটি পিচলে সোজা মুখে ঢুকে যায় এবং জ্যান্ত অবস্থাতেই সরাসরি পেটে চলে যায়। এর পরেই অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন শংকর। তাকে দেখে রীতিমতো ঘাবড়ে যান তার বন্ধুরা এবং সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বাড়িতে এনে পরিবারকে পুরো বিষয়টি জানান। পরিবারের সদস্যরা প্রথমে শঙ্করকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলেও সেখানে ঠিকমতো চিকিৎসা হয়নি। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকরাই তাকে সঙ্গে সঙ্গে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু শঙ্করের পরিবার ওই যুবককে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে রাজি হয়নি। স্থানীয় সূত্রে খবর, এরপরেই শঙ্করের পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ ওই যুবককে নিয়ে সোজা বাড়ি ফিরে আসেন এবং স্থানীয় এক ওঝার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর রাতভর অসুস্থ শঙ্করকে বাড়িতে রেখেই চলে তন্ত্রমন্ত্র পাঠ।
এইভাবে বিনা চিকিৎসায় ক্রমে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই যুবক এবং পরের দিন অর্থাৎ সোমবার সকালে বাথরুমে যেতে গিয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। উপযুক্ত সময় থাকলেও শুধুমাত্র পরিবারের গোঁড়ামি এবং কুসংস্কারের কারণেই ওই যুবকের এমন অকাল প্রয়াণ হল বলে দাবি স্থানীয় পুলিশের। অন্যদিকে এইভাবে বেঘোরে ওই যুবকের মৃত্যু হওয়ায় এলাকাতেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া।