কলকাতা: রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী নাকি দিল্লিতে। তিনি নাকি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। শুক্রবার, সারাদিন কলকাতা এবং রাজ্যের আনাচে কানাচে এই গুঞ্জন শোনা গিয়েছে। কিন্তু, দিনের শেষে জানা গিয়েছে। পুরোটাই গুজব। যা রটেছে তার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। বাস্তব এই যে, রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী রাজ্যেই রয়েছেন। এমনকি, অনেকে বলছেন, শুক্রবার সারাদিন তিনি কলকাতাতেই ছিলেন। দিনের শেষে বিজেপি সমর্থকদের জন্য একরাশ হতাশা ছাড়া আর কিছুই জোটেনি।
রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বাজেনি। কিন্তু, মৃদু পদধ্বনি যে শোনা যাচ্ছে না, তা নয়। শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এবং প্রধান চ্যালেঞ্জ- প্রদানকারী বিজেপি ঘর গুছিয়ে নিতে চাইছে। কিন্তু এর মাঝেই রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের একটি মন্তব্য বিজেপি সমর্থকদের আশার আলো দেখিয়েছিল। শুভেন্দু কবে বিজেপিতে আসছেন সেই প্রশ্নের জবাবে দিলীপ বলেন, বিজেপির দরজা খোলা, কেউ যদি আসতে চান তা তার বিষয়। এর পরই কলকাতা থেকে প্রকাশিত একটি বাংলা দৈনিকের প্রতিবেদন দাবি করে শুভেন্দু দিল্লিতে রয়েছেন। কিন্তু, তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বদল চাইছে বিজেপি। সেই জন্যই প্রভাবশালী মুখ বাংলার রাজনীতিতে আনার চেষ্টা করছে বিজেপি। রণনীতি স্পষ্ট। বিপক্ষ দলের মেসি-রোনালদোদের নিয়ে নিলে জন মানসে প্রভাব পড়ে। বিপক্ষও মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেস ভাঙিয়ে অনেক নেতাদের বিজেপিতে এনেছেন। সেই সময় থেকেই শুভেন্দুর নাম শোনা গিয়েছিল। পরবর্তী কালে এই গুঞ্জন আরও জোরাল হয়েছে।
স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সরকার গঠিত হয়নি। কিন্তু, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের অবস্থান যে ছিল না তা নয়। বলতেই হয়, স্বাধীনতার পর এই প্রথমবার এই রাজ্যে সরকার গঠন করতে উঠেপড়ে লেগেছে বিজেপি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রায় ২০ হাজার আসন দখল করেছে পার্টি। লোকসভা নির্বাচনে ১৮টি আসন দখল করেছে বিজেপি। রাজ্য সম্পর্কে পার্টির দৃষ্টি ভঙ্গি বদলেছে। মোদি-শাহ-নাড্ডার আনাগোনা বেড়েছে।
সেই দিক থেকে বিচার করতে গেলে মুখ্যমন্ত্রীত্বের দৌড়ে কোনও অচেনা মুখ এনে চমক তৈরি করতে চাইবে না বিজেপি। অন্তত স্বাভাবিক দৃষ্টি ভঙ্গি তা-ই বলে। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ দুই দফায় সভাপতি হয়েছেন। তার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে, পার্টি যদি চমক চাইত, তবে তার মেয়াদ বৃদ্ধি হত না। বিজেপির দখলে ৪০ শতাংশ ভোট হয়েছে। আর এই রাজ্যে বিজেপির প্রধান মুখ দিলীপ ঘোষ-ই। ভোটে জিততে পার্টি অন্য কোন মুখের দিকে তাকিয়ে থাকবে, এমন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সেক্ষেত্রে বিধানসভা নির্বাচন যদি পার্টি জিততে পারে তবে কোনও নতুন মুখ মুখ্যমন্ত্রী হবে, এমন সম্ভাবনা নেই।