নয়াদিল্লি: ডিজিটাল ও সোশ্যাল মিডিয়ার বাড়বাড়ন্ত যুবাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ ও বিতর্কেও নতুন রং আনছে। এ যাবৎ ভারতীয় রাজনৈতিক দলগুলি বা তাদের নেতারা যুব ভোট দখল করেছিলেন অনেক সহজে। রাজনৈতিক বিশ্লেষণ বলছে, সে সব দিন এখন অতীত। বয়স, জাত, অঞ্চল বা ধর্মের মতো বিষয় নিয়ে যুবা ভোটব্যাঙ্ক এখন খুব একটা আর চিন্তিত নয়। অদ্ভুতভাবে, এই মতাদর্শের পরিবর্তন কিন্তু নরেন্দ্র মোদী ভারতীয় রাজনীতির কেন্দ্রে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই।
২০১৪ সাল থেকে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী ভোটারদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ভোট পরবর্তী সার্ভে বলছে, এই শ্রেণির ভোটাররাই বিজেপিকে সবচেয়ে বেশি ভোট দিয়েছিল। ২০১৯ সালেও কম – বেশি একই প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। আগামী বছরগুলিতে মধ্যবয়সী ভোটারদের সংখ্যা কমবে। ফলে কমবয়সী ভোটারদের গুরুত্ব বাড়বে বলা বাহুল্য। সূত্র বলছে, বয়সের ভিত্তিতে রাজনৈতিক মতাদর্শের পার্থক্যও বাড়তে চলেছে। 'ইউগভ- মিনট- সিপিআর মিলেনিয়াল' ( YouGov – Mint – CPR Millennial) সার্ভে জানাচ্ছে, নাগরিক সংশোধনী বিল ( CAA) বা, আর্টিকেল ৩৭০ এর মতো বিতর্কে ভারতীয় সমাজ এখন দু'মেরুতে অবস্থান করছে।
শহর বা শহরতলীর যুবারা এই রাজনৈতিক অবস্থানে বয়স্কদের সঙ্গে অনেকটাই মতপার্থক্য গড়ে তুলেছেন। পাওয়া তথ্য অনুসারে, ১৯৯৬ সালের পর জন্মানো ভোটাররাই ( অর্থাৎ ২৩ বছরের আশেপাশে) এই মেরুকরণে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছেন। এই জেনেরেশন জেড (z) রাই হয়তো আগামী রাজনৈতিক অবস্থান ও পরিবর্তনে বৃহত্তর ভূমিকা নিতে পারেন।
জেড প্রজন্মের মতাদর্শের ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে আবার সোশ্যাল মিডিয়াগুলি, যেখানে এখন প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক মত প্রকাশকে কেন্দ্র করে রীতিমতো তর্কাতর্কিও চলে। জাতি, ধর্ম, ভাষা বা শ্রেণিবিভেদে যুবারা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা যেমন সেখানে তুলে আনছে, একই সঙ্গে তা প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করছে তাদের নিজস্ব যুক্তিবোধও। ফলে রাজনৈতিক প্রচার বা প্রতিবাদের প্ল্যাটফর্মও এখন অনেকটাই অনলাইনমুখী, যা যুবাদের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে সাহায্য করছে। সুতরাং, বলাই যায়, আগামী ভারতীয় রাজনীতির ব্যাটন এখন পুরোমাত্রায় জেড জেনারেশনের হাতে।