গত এক বছর বিজেপিতে থেকে কী করলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়?

গত এক বছর বিজেপিতে থেকে কী করলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়?

দেবময় ঘোষ: শোভন চট্টোপাধ্যায় দল পরিবর্তন করছেন না। সেই বিষয়ে নিশ্চিন্ত থাকা যায়। ২০১৯ এর ১৪ অগাস্ট তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে এসেছিলেন শোভন। তারপর থেকে বিজেপিতে নানা উঠাপড়ার মধ্যেই টিকে রয়েছেন তিনি। কিন্তু, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের কয়েকমাস আগে অনেকেই তাকে দলের সামনের সারিতে দেখতে চান। দলে থেকেও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মত অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ কেন পিছনের সারিতে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একটি প্রশ্ন বারবার উঠে আসছে। গত এক বছর বিজেপিতে থেকে নিজের রাজনৈতিক জীবনে কী উন্নতি করলেন শোভন? বিজেপিতে তিনি কেন এসেছিলেন। তৃণমূলেই যদি তাকে ফিরে যেতে হয় তবে তিনি ওই দল ছেড়েছিলেন কেন?

পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় দল পরিবর্তন করেছিলেন। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে তিনি এসেছেন একবছর হয়ে গেল। কিন্তু, এই এক বছরে তিনি দলকে কি দিলেন বা দল থেকেই বা কী পেলেন, তা আবছা।পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক-প্রশাসনিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে তাঁর দল সম্প্রতি রাজ্য কমিটিতে পরিবর্তনও করে ফেলেছে। উদ্দেশ্য, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে সরকার গঠন। কিন্তু, শোভন কোথায়? যে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার মূল্য দিয়ে 'ক্ষুব্ধ' শোভনকে তৃণমূল থেকে বিজেপি আনা হয়েছিল – তা কি মূল্যহীন হয়েছে? এখন কী তাঁকে আর দরকার নেই? বিজেপিতে শোভনের অবস্থান নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ কিছু মাস আগে বলেছিলেন, “শোভন চট্টোপাধ্যায় দলেই আছেন।”

দলবদল নিয়ে মাঝে মাঝেই সংবাদ শীর্ষে থাকেন কলকতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দলবদল, ৯০ দশকে কলকাতা ফুলবলের দলবদলের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। দলবদলের বাজারে শোভনের সঙ্গে চিমা বা কৃষানু-বিকাশ-সুব্রত-সুদীপদের তুলনা টানা যেতে পারে। তবে একথা ঠিক, দুই নৌকায় পা দিয়ে রাজনীতিতে যে নজির সৃষ্টি করেছেন শোভন, তার তুলনা বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে দ্বিতীয়টি আছে কিনা তা এখন গবেষণার বিষয়। মঙ্গলবার সারাদিন রাজ্যের রাজনৈতিক আঙিনায় এই কথা বারবার ঘোরাফেরা করেছে যে শোভন আবার নিজের পুরান দলে ফিরছেন। অনেকে বলছেন, পি কে না চাইলে শোভন এতদিন তৃণমূলেই ফিরে যেতেন। কিন্তু, তিনি চান না। তাই শোভনের ফেরা হয়নি।

দিন বদলেছে। বিধান সভায় বাম, কংগ্রেস বিধায়কের অনেকেই সুবিধা এবং পাওনার জন্য তৃণমূলে নাম লিখিয়েছিলেন। বিজেপিও বহু তৃণমূল , বাম, কংগ্রেস নেতা, বিধায়ক এবং সাংসদকে নিজের দলে আনতে সক্ষম হয়েছে। রাজনীতি এখন ময়দানের দল বদলের মতই। তবে, লেনদেন প্রকাশ্যে আসে না।

শোনা গিয়েছিল, তৃণমূলের  কাছে শোভনের সাফ কথা, রত্নাকে তা তাড়ালে তিনি তৃণমূলে যাবেন না। অন্যদিকে, কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে মেয়র পদেপ্রার্থী হিসাবে শোভনকে চায় বিজেপি। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা নাকি শোভন কে চেয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে শোভনের হাতে অস্ত্র হিসাবে রয়েছে পদ্মফুল। যা তিনি ঘাসফুলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারেন। কিছুদিন আগেই প্রাক্তন সহকর্মী বর্তমানে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে সমালোচনা করেছিলেন শোভন। বলেছিলেন, উমপুন পরিস্থিতি আরও দক্ষ ভাবে সামলান যেত। অনেকেই ভাবছিলেন, শোভনের বিজেপির মেয়র প্রার্থী হওয়া পাকা। কিন্তু, রাজ্য কমিটির অবস্থান দেখে তা যদিও মনে হচ্ছে না এখন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *