ওয়াশিংটন: ১৩০ কোটি জনতার আশা বুকে নিয়ে চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল চন্দ্রযান-২৷ শেষ মুহূর্তে ল্যান্ডার বিক্রম হারিয়ে গিয়েছিল চাঁদের বুকে৷ তাকে খুঁজতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন ইসরো ও নাসার বিজ্ঞানীরা৷ সেই পর্ব এখনও চলছে৷ তবে, মহাকাশ গবেষণায় সাফল্য-ব্যর্থতা যাই হোক না কেন, এবার নতুন উদ্যমে লালগ্রহে মানুষ পাঠানোর উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে মার্কিন গবেষণা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা৷
আগামী ২০২০ সালে লালগ্রহে অত্যাধুনিক ল্যান্ডার ও রোভার নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে নাসার৷ সেখানে ল্যান্ডার নামানো হবে৷ মঙ্গলের প্রাণের অস্তিত্বের খোঁজ চবে৷ একই সঙ্গে সেই সন্ধানের ভিত্তিতে লালগ্রহে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু করতে চলেছে নাসা৷ মঙ্গলগ্রহে যন্ত্র পাঠিয়ে প্রাণের সন্ধান নেওয়ার পাশাপাশি মানুষ পাঠানোর তোড়জোড় চলছে৷ জানা গিয়েছে, মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার জন্য মানুষের পোশাক তৈরির কাজ কাজে হাত লাগিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা৷ কেননা, মহাকাশ ও চাঁদের তুলনায় লালগ্রহের পরিবেশ একদম অন্যরকম৷ ফলে সেখানকার জলবায়ু মাটি ও সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য খতিয়ে দেখে মহাকাশচারীদের পোশাক নির্মাণ শুরু হচ্ছে৷ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৫-৬ বছরের মধ্যেই নাসার বিজ্ঞানীরা লালগ্রহে পৌঁছে দেবেন মানুষকে৷
অন্যদিকে, সমস্ত আশা-ভরসা, ১৩০ কোটি জনতার স্বপ্ন বুকে আগলে চাঁদের বুকে চিরতরে হারিয়ে গিয়েছে ল্যান্ডার বিক্রম৷ ইসরোর বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ল্যান্ডার বিক্রমের খোঁজ শুরু করেছিল নাসার বিজ্ঞানীরা৷ এবার সেই নাসার পাঠানো ছবিতে মিলল বিক্রমের অস্তিত্বের চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ নাসার তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, ল্যান্ডার বিক্রম ঠিক কোথায় রয়েছে, তা এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি৷ কারণ সফট ল্যান্ডিংয়ের যে জায়গা আগে থেকেই নির্ধারিত করা ছিল, সেই অঞ্চলের বিক্রমের কোনও অস্তিত্ব মেলেনি৷ ফলে খুব সম্ভবত ল্যান্ডার বিক্রমের ল্যান্ডিং সফট ল্যান্ডিংয়ের পরিবর্তে হার্ড ল্যান্ডিং হয়ে থাকতে পারে৷ নাসার পাঠানো ছবিতে এমনই তথ্য জানিয়েছে নাসা৷
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা তরফে দু’টি ছবি ইতিমধ্যেই সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে৷ সেখানে যে ছবি দু’টি উল্লেখ করা হয়েছে, তাতে কোথাও ল্যান্ডার বিক্রমের হদিস পাওয়া সম্ভব হয়নি বলেও জানানো হয়েছে৷ মনে করা হচ্ছে, চাঁদের বুকে অবতরণের সময় হয়তো ঝলসে গিয়েছে ল্যান্ডার বিক্রম, অথবা চাঁদের মাটিতে ধূলিঝড়ে অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গিয়েছে বিক্রমের৷ ফলে নতুন করে আর ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ বা তাকে ফিরিয়ে আনার মতো কোনও পরিস্থিতি আর আপাতত নেই৷ যদিও ল্যান্ডার বিক্রমের জীবনকাল ছিল মাত্র ১৪ দিন৷ সেই সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই৷ ফলে আপাতত বিক্রমকে ভুলে অরবিটারের পাঠানো তথ্যকে কাজে লাগিয়ে চাঁদের বুকে অজানার খোঁজ শুরু করতে উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে ইসরো ও নাসার বিজ্ঞানীরা৷