কলকাতা: বর্ধমানে গাভীকল্যাণ সমিতির সভা মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যেই রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ ঘোষণা করেছিলেন, গোরুর দুধে সোনা থাকে৷ আর সেই কারণেই দুধের রং হলদেটে হয়৷ এই মন্তব্যের পর যুক্তি দিয়ে দিলীপ ঘোষ বোঝাতে চেয়েছেন, গোরুর খুঁজে সূর্যের আলো পড়লে সেখান থেকে সোনা তৈরি হয়৷ দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ সমালোচনার ঝড় উঠেছে রাজ্যজুড়ে৷ কিন্তু অদ্ভুত হলেও সত্যি, দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য এ মন্তব্যকে সমর্থন যুগিয়েছেন গবেষকদের একাংশ৷ আর সেটা নিয়েই শুরু হয়েছে নয় চর্চা৷
পোল্যান্ডের ডিপার্টমেন্ট অফ এনিম্যাল হাইজিন অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ও ইউনিভার্সিটি অফ ইনোরগানিক টেকনোলজি অ্যান্ড মিনারেল ফার্টিলাইজার এবং ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষণার পাশাপাশি জুনাগড় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও দোরুর দুধে সোনার পরিমাণ যোগ্য উপস্থিতিকে সমর্থন করেছে বলে প্রকাশিত হয়েছে খবর৷ পোল্যান্ডের গবেষক জে ডোবরানজেনকি তাঁর গবেষণাপত্কে জানিয়েছেন, গোরুর দুধে মোট ৩৮ রকমের মাইক্রো এলিমেন্ট রয়েছে৷ তার মধ্যে সোনাও আছে৷ মধ্যইউরোপের সাইলেসিয়া অঞ্চলের গোরুর দুধে সোনা পাওয়া যায় বলে দাবি করা হয়েছে ওই গবেষণাপত্রে৷
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইনস্টিটিউট অফ হোমাটোলজি এন্ড ট্রান্সফিউশন বিভাগের রিসার্চ ফেলো ড. রাজলক্ষ্মী বসুর বাংলার একটি সংবাদপত্রকে জানিয়েছেন, গোরুর দুধে স্বল্পমাত্রায় সোনার উপস্থিতি রয়েছে৷ ২০০৪-২০০৫ সাল নাগাদ পোল্যান্ডে একটি গবেষণাপত্র আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশিত হয়৷ সেখানে গবেষণা অনুসারে দুধের স্বল্পমাত্রায় স্বর্ণ ও অন্যান্য ধাতব যৌগের উপস্থিতির কথা স্বীকার করা হয়েছে৷ যে পরিমাণ ধাতব উপস্থিত থাকে তা বিশেষ বৈজ্ঞানিক যন্ত্র দ্বারা পরিমাণ যোগ্য৷ এই স্বর্ণ যৌগিক লবণ রূপে দুধের মধ্যে অবস্থান করে৷
ওই সংবাদমাধ্যমে রাজলক্ষ্মী বসু আরও জানিয়েছেন, জুনাগড় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় প্রমাণ করেছে, গির অঞ্চলের দেশি গোরুর মুত্র স্বল্পমাত্রায় স্বর্ণ উপস্থিত মিলেছে৷ সোনার উপস্থিতি থাকা মানেই তা গোরুর রক্ত ও দুধে থাকবে৷ এই অর্থে দীলিপবাবু কিন্তু একদম ভুল বলেননি৷ বিশ্বে অনেক গবেষণায় এই বিষয়ে কাজ করছে৷ যদিও এই গবেষণা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে বিজ্ঞানীদের অন্দরেই৷ অনেকেই বলছে এখনও পর্যন্ত বিষয়টি ধ্রুব সত্য হিসেবে ধরে নেওয়া যাচ্ছে না৷ কারণ এটা নিয়ে এখনও কাজ বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে৷ ফলে গোরুর দুধে সোনা থাকে এখনই তা নিশ্চিত ভাবে প্রমানিত নয়৷