তপন মল্লিক চৌধুরী : জুতো ছিল না বলে খালিপায়ে হেঁটে স্কুলে গিয়েছেন। দুর্দান্ত রেজাল্ট করে জীবন শুরু করেছিলেন ডাকবিভাগের আপার ডিভিশন ক্লার্ক হিসেবে। কালক্রমে শিক্ষকতায় এসেছিলেন।
বেশ কিছু দিন তিনি সাংবাদিক হিসাবেও কাজ করেন। দেশের ডাক নামে একটি পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। এছাড়াও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের ট্রাস্টি ও পরে নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের সভাপতি পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। অন্যদিকে তিনি ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা।
১৯৭৩ সালে ইন্দিরা গান্ধীর ক্যাবিনেট মন্ত্রিসভায় স্থান পান তিনি। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত তিনি রাজ্যসভার দলনেতা ছিলেন এবং ১৯৮২-৮৪ পর্বে তিনি ছিলেন ভারতের অর্থমন্ত্রী। উল্লেখ্য ১৯৮৪ সালে যুক্তরাজ্যের ইউরোমানি পত্রিকার একটি সমীক্ষায় তিনি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পাঁচ অর্থমন্ত্রীর অন্যতম হিসেবে বিবেচিত হন। দীর্ঘসময় দেশের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। একাধারে শ্রুতিধর ও প্রখর স্মৃতিধর হওয়ায় ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে প্রায় সমস্ত দলীয় রেজোলিউশনের খসড়া তৈরি করেছেন।
কেন্দ্রে অর্থ, বিদেশ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। সনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে ইউপিএ সরকারে অন্তত কুড়িটি মন্ত্রিগোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিয়েছেন। কার্যত্তিনি ছিলেন কংগ্রেসের ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’। বা ‘মুশকিল আসান’ হিসেবে কাজ করেছেন। প্রতিবছর পুজোয় মিরিটির বাড়িতে ভক্তিভরে চণ্ডীপাঠ করেছেন যিনি, তিনিই আবার রাজনৈতিক জীবনের নানা ঝড়ঝাপ্টা সামলেছেন। ফি শনিবার উপবাস করার মতোই কঠোর শৃঙ্খলা নিয়ে রাজনীতিক হিসেবে নিজের ধর্ম নিরবচ্ছিন্নভাবে পালন করেছেন।
এক্সময় আনন্দবাজারের প্রধান সম্পাদক অভীক সরকারের অনুরোধে প্রণব মুখোপাধ্যায় ‘গ্যাট’ চুক্তি নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার সমস্ত কর্মীর ক্লাশ নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি। ২০১২ সালে এনডিএ প্রার্থী লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার মেঘালয়ের ভূমিপুত্র পিএন সাংমাকে ৭১ শতাংশের বেশি ভোটে হারিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে ইউপিএ প্রাথী হিসাবে নির্বাচিত হন।