কলকাতা: মুকুল রায় এবং দিলীপ ঘোষের 'অম্ল-মধুর' সম্পর্ক রাজ্য রাজনীতির অন্যতম চর্চিত বিষয়, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ পদাধিকার বলে সংগঠনের মাথায়। আবার দিল্লির পার্টি (আপনি চাইলে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বলতে পারেন) ভোট করানোর ব্যাপারে মুকুল রায়ের উপর বেশি নির্ভরশীল। বিজেপির সাম্প্রতিক সাফল্যের পিছনে মুকুলের অবদান স্বীকার করে গিয়েছেন অমিত শাহ, জে পি নাড্ডা।
ভোটে জিততে যে মুকুলকে লাগবেই তা জলের মত পরিষ্কার বুঝেছে কেন্দ্রীয় বিজেপি। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন খেটেখুঁটে রাজ্যে নিজেকে বিজেপির 'পোস্টার বয়' তৈরি করেছেন দিলীপ। বিজেপি বলতেই লোকে দিলীপ ঘোষের কথা মুখে আনে। গ্রাম ঘাটে তার বিতর্কিত 'ডায়লগ' বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। কিন্তু ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার জন্য দিলীপের 'ডায়লগ' যথেষ্ঠ নয় – বরং প্রয়োজন বুথভিত্তিক সংগঠন তা শাহ-নাড্ডাকে বুঝিয়ে দেওয়ার দরকার নেই। সেখানেই ফের দ্বন্দ্ব বেঁধেছে মুকুল-দিলীপের।
মুকুল রায় মনে করেন, বিজেপির জেলাস্তরের নেতারা কাজ করছেন না। নির্বাচনের বাকি আট মাস। কিন্তু তৈরি নয় বুথ ভিত্তিক সংগঠন। অনেক জায়গায় বুথ কমিটিই গড়ে ওঠেনি। জেলার সংগঠনের দায়িত্ব বর্তায় রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপর। সুতরাং মুকুলের উষ্মার মূল লক্ষ্য যে দিলীপ তা স্পষ্ট। স্বাভাবিক ভাবেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন দিলীপ।
সংখ্যা-বিতর্ক: রাজ্যে প্রায় ৭৮ হাজীর বুথের সব কটিতে তৃণমূল কংগ্রেসের মজবুত সংগঠন রয়েছে। বিজেপির তা নেই। বিজেপির রাজ্য কমিটির বৈঠকে তা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। মুকুল রায় সংগঠনের দূর্লতার বিরুদ্ধে দোষারোপ করেন। পালটা দিলীপের দাবি, ৫৫ হাজার বুথে বিজেপির কমিটি ইতিমধ্য়েই সক্রিয়। বাকি ৮ হাজার বুথে তাদের একজন করে সক্রিয় কর্মী রয়েছে। অর্থাত মোট ৬৩ হাজার বুথে বিজেপির কর্মী রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে ভার্চুয়াল সবা করেছেন, সেখানে ৬৩ হাজার বুথে লিঙ্ক পাঠানো হয়েছে। এদিকে মুকুল রায় সাফ জানিয়েছেন, বুথ সংগঠন জোরালো না হলে ক্ষমতা দখলের আশা না করাই ভাল।