বারাসাত: নাম তাঁর বাবুল গুপ্ত। নেশা হাজার হাজার কিলোমিটার দূরের দুর্গম প্রান্তের রেডিও স্টেশনগুলির খোঁজ করা৷ এক বছর দুই বছর নয় বরং টানা ১২-১৩ বছর ধরে এই নেশায় ডুবে আছেন বাবুল বাবু৷ আর এই নেশার হাত ধরেই তিনি এক গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য পেয়েছেন৷ বাড়িতে বসেই প্রায় ২১ হাজার কিলোমিটার দূরের রেডিও স্টেশনের বার্তা রেকর্ড করতে সফল হয়েছেন বাবুল গুপ্ত৷
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাতের সুবর্ণপত্তন অঞ্চলের বাসিন্দা বাবুল গুপ্ত। বাড়ি থেকে প্রায় ২১ হাজার কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ মেরুতে গবেষণার শিবির করা বিজ্ঞানীদের প্রেরিত বার্তা রেকর্ড করেছেন তিনি। ইন্ডিয়ান ডি-এক্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের ৬৯ বছরের সদস্য বাবুল বাবু। পেশাগত ভাবে তিনি ইন্টেরিয়র ডিজাইনার। গত ৮ আগস্ট বাবুল বাবু তাঁর হাই ফ্রিকোয়েন্সি রেডিওতে প্রায় সোয়া চার মিনিট ব্যাপি দক্ষিণ মেরুর একটি শব্দতরঙ্গ রেকর্ড করেন।
পশ্চিমবঙ্গ রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাসের কথায়, বাবুলবাবু সংস্থার আজীবন কর্মী। ওঁর এই সাফল্য গোটা সংস্থার কাছেই গর্বের বিষয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই শব্দতরঙ্গ রেকর্ড করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। কারণ তরঙ্গের অভিমুখ থাকে আমেরিকা ও ইউরোপের দিকেই। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের বারাসতে বসে এই সাফল্য অর্জন করতে দীর্ঘদিনের পরিশ্রম লেগেছে বাবুলবাবুর৷ বিশ্বের বিভিন্ন শর্ট ওয়েভ রেডিও স্টেশনের এই শব্দতরঙ্গ রেকর্ড করতে দিনরাত এক করতে হয়েছে বাবুল গুপ্তকে৷
বাবুল বাবুর বাড়িতে মোট ১২টি অত্যাধুনিক হাই ফ্রিকোয়েন্সির রেডিও আছে, যাতে সুদূর দক্ষিণ মেরুর এই শব্দতরঙ্গ সুস্পষ্টভাবে রেকর্ড করা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ভৌগলিকভাবে ভারত দক্ষিণ মেরুর ওই শব্দতরঙ্গের উৎসস্থলের সম্পূর্ণ বিপরীত দিকে অবস্থান করে। এই কারণেই ভারত থেকে এখানকার রেডিও বার্তা সহজে রেকর্ড করা যায় না। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, দক্ষিণ মেরুর 'এলআরএ ৩৬' গবেষণা ক্যাম্প থেকে বিজ্ঞানীদের প্রেরিত বার্তা বাবুল বাবু রেকর্ড করেছেন৷ রেকর্ড করার পর সেই বার্তা ইমেল মারফত বাবুলবাবু বিজ্ঞানীদের কাছে পাঠিয়ে দেন৷ বিজ্ঞানীরা ভুয়সী প্রশংসার সঙ্গেই ডিজিটাল শংসাপত্র বাবুলবাবুকে পাঠিয়ে দেন৷