গোয়ায় ফের বড়সড় ধাক্কা ভাঙনের মুখে পড়তে চলেছে জাতীয় কংগ্রেস দল। ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন অন্তত ছয় বিধায়ক। রবিবার বিকেলেই জানা গিয়েছে গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক কংগ্রেস নেতার মদতেই হাত ছেড়ে পদ্মের দিকে পা বাড়িয়েছে গোয়ার প্রায় হাফ ডজন বিধায়ক। যে কোনও মুহূর্তে এই দলবদলের ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানা গিয়েছে। তবে সরকারিভাবে এখনও কিছুই জানানো হয়নি। অন্যদিকে এই খবর ভুয়ো বলে অস্বীকার করেছে কংগ্রেসও। বিজেপির তরফ থেকে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। প্রসঙ্গত, ৪০ আসনের গোয়া বিধানসভায় কংগ্রেসের ১১ জন বিধায়ক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যেই ছয়জনকে দল ছেড়ে বেরিয়ে আসতে ৪০ কোটি টাকার প্রস্তাব দিয়েছে গেরুয়া শিবির। পদ্ম শিবিরের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ এনে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গিরীশ চডঙ্করের বক্তব্য, বিভিন্ন শিল্পপতি ও কয়লা মাফিয়াদের দিয়ে ফোন করানো হচ্ছে কংগ্রেস বিধায়কদের।
জল্পনা চলছে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগম্বর কামাত-সহ ছ’জন কংগ্রেস বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। অথচ, ভোটের আগে এই বিধায়করাই মন্দির, মসজিদ, চার্চে গিয়ে শপথ নিয়েছিলেন যে ভোটের পর তাঁরা দলবদল করবেন না। দলত্যাগের পরিকল্পনার যিনি মূল চক্রী সেই দিগম্বর কামাত এক সময় গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। গোয়া কংগ্রেসের চরম দুঃসময়েও তিনি দলের সঙ্গেই ছিলেন। এমনকি চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস যদি ক্ষমতায় ফিরত তাহলে গোয়ায় কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদারও তিনিই হতেন। কিন্তু হঠাৎ গান্ধী পরিবারের বিশ্বস্ত এই সেনাপতিই বিজেপির সঙ্গে হাত হাত মেলাতে চলেছেন বলে খবর।
এর সঙ্গেই আরও জানা যাচ্ছে দলের অন্দরে থেকে বিজেপির সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রেখে কাজ করছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগম্বর কামাত এবং গোয়া বিধানসভার বিরোধী দলনেতা মাইকেল লোবো। এরাই সদলবলে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তড়িঘড়ি মুকুল ওয়াসনিককে গোয়ায় পাঠিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। রবিবার গোয়ায় কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বৈঠক ডেকেছিলেন এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক দীনেশ গুণ্ডুরাও। তাতে ১১ জন বিধায়কের মধ্যে মাত্র ৬ জন উপস্থিত ছিলেন। এরপরেই কংগ্রেসের এই দলীয় ভাঙনের গুজব কার্যত নিশ্চিত খবরে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে আগেই একবার ভাঙ্গনের মুখে পড়ে কংগ্রেস দল। সেই সময়ও হাত-শিবিরের অনেক সক্রিয় সদস্যই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের এসে যোগ দিয়েছিলেন। যদিও এই বছরে গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচনে খুব একটা চমকপ্রদ ঘটনা ঘটাতে পারেনি ঘাসফুল শিবির। ফলে নির্বাচনের পরে ফের কিছু বিদায়ী কংগ্রেস নেতা-নেত্রী আবার তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়েও বেরিয়ে গিয়েছিলেন। এইভাবে চলতি বছরের শুরু থেকেই দলবদলের খেলায় মেতেছেন গোয়ার বিধায়করা।