পাটনা: বিজেপির জন্য বিহারের নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ বিহারে এনডিএর অন্যতম শরিক এলজেপির সঙ্গে নীতীশের জেডিউর দূরত্ব বাড়ছে৷ এই অবস্থায় কংগ্রেস এলজেপিকে মহাজোটে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে৷ এদিকে জীতেন রাম মাঝি মহাজোট থেকে বেরিয়ে এনডিএতে যোগ দেওয়ায় বিহারের রাজনৈতিক সমীকরণ বেশ জটিল আকার ধারণ করেছে৷
আসন ভাগাভাগি নিয়ে দর কষাকষিতে জোট যাতে ভেঙে না যায় তার জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। গত বছর ঝাড়খণ্ডে একলা চলো নীতির জেরে হারতে হয়েছিল বিজেপিকে। মহারাষ্ট্রেও মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে বিবাদের জেরে দীর্ঘদিনের বন্ধু শিবসেনার হাত ছাড়তে হয়েছে৷ সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই বিহারে এগোতে চাইছে গেরুয়া শিবির৷ যে কারণে দেবেন্দ্র ফড়নবিশের ঘাড়ে বিহার নির্বাচনের দায়িত্ব পড়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা৷
বর্ষার মরশুমে বিহারের ১৮টি জেলা বন্যা কবলিত৷ তাছাড়া করোনার আবহে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে৷ এই নির্বাচনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পরিযায়ী শ্রমিক৷ করোনা আবহে গত কয়েকমাসে রাজ্যে ফিরেছেন ৩০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক৷ যাদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বিরোধীদের রোষের মুখে পড়তে হয়েছিল নীতীশ কুমারকে৷ শুধু তাই নয় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যখন কোটা থেকে বিহারের আটকে পড়া ছাত্রদের রাজ্যে ফেরানোর জন্য সাহায্য দেওয়ার কথা বলেছিলেন, তখন তা গ্রহণ না করে ছাত্রদের রাজ্যে ফেরাতে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন নীতীশ৷
কর্মসংস্থান চিরকালই বিহারের জন্য একটি মাথা ব্যথার কারণ ছিল৷ এর জেরেই এত সংখ্যক পরিযায়ীরা অন্য রাজ্যে কাজের সন্ধানে চলে যেতেন৷ তাই স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনের সময় কর্মসংস্থান একটি বড় ফ্যাক্টর হিসাবে দেখা দেয়৷ এবং এই নির্বাচনেও নীতীশ এবং বিজেপির বিরুদ্ধে বেকারত্বকে ইস্যু করে আক্রমণ শানাচ্ছেন বিরোধীরা। প্রসঙ্গত, চলতি বছরে বিহারে বেকারত্বের হার ৪৬.৬ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে৷ যা নীতীশ কুমারের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলার জন্য যথেষ্ট৷ গঙ্গা দিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল৷ বিহারে ২০০৫ সালে নীতীশ কুমার যেবার প্রথমবার লালু প্রসাদকে হারিয়ে গদিতে বসেছিলেন, সেবার সবথেকে বড় নির্বাচনী ফ্যাক্টর ছিল, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি৷
এরপর ১৫ বছরে গঙ্গা দিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল৷ ইতিমধ্যে চির প্রতিদ্বন্দ্বী আরজেডির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন নীতীশ৷ পরে ফের মোদী বিরোধিতা ছেড়ে বিজেপির সঙ্গ নিতে বাধ্য হয়েছিলেন নীতীশ৷ পরিস্থিতি আগের থেকে ভালো কি খারাপ, তার বিচার না করে বিরোধীদের কাছে এটা একটি বড় হাতিয়ার৷