নয়াদিল্লি: ২০২০ সালে ভারতীয় রাজনীতিতে ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের গুরুত্ব কতটা তা বিশ্লেষকরা হঠাত হিসাব করতে বসেছেন। সাম্প্রতিক অতীতে কংগ্রেসের দিকে ‘লক্ষ্মী বাঈ’ – কে ইস্যু করে অজস্র বাক্যবাণ চালিয়েছে বিজেপি। কিন্তু রাজস্থানের রাজনীতিতে ‘সপার্ষদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া’র দলবদল কংগ্রাসের জন্য ‘গেম চেঞ্জার’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে বিজেপি প্রচার করে বেরিয়েছে, ভারতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যের অধিপতিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ‘লক্ষ্মী বাঈ’য়ের পতন চেয়েছিল সিন্ধিয়ারা। জ্যোতিরাদিত্যের দলবদলে কংগ্রেস সেই অভিযোগ সুদে আসলে ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়ে গিয়েছে।
কথায় আছে, ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে। ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের কংগ্রেসের দিকে এক সময় ছিল যে অভিযোগ, তা আবার বিজেপির দিকেই ফিরে এসেছে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের সময় রাজস্থানের এই রাজ পরিবার ছিল ব্রিটিশ সম্পাজ্যবাদের পক্ষে, কোম্পানির পক্ষে এবং ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের – অনেকেই এমন অভিযোগ করেন। বিগত দিনে রাজ পরিবার থেকে অনেক সদস্য কংগ্রেস এবং বিজেপিতে যোগদান করেছেন। অভিযোগ এবং পালটা অভিযোগ ছিল অবিরত।
কিন্তু, বর্তমানে রাজ পরিবারের আর কেউ কংগ্রেসে সেই। জ্যোতিরাদিত্যের কাকিমা বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া রাজস্থানে বিজেপি সরকারেরে সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। অন্য ককিমা যশোধরা রাজে সিন্ধিয়া মধ্যপ্রদেশে শিবরাজ সিং চৌহানের মন্ত্রী।
ভারতের রাজনীতিতে মূর্তির গুরুত্ব অপরিসীম। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের খণ্ডন করতে ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের বিশাল মূর্তি প্রতিস্থাপন করতে চায় কংগ্রেস। গোয়ালিয়রে ওই মূর্তি বসবে। হ্যাঁ, রাজস্তানে উপনির্বাচন নভেম্বর মাসেই হওযার কথা। কংগ্রেস নেতা কমলনাথ ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসেননি এমন অভিযোগ করেছে বিজেপি। কংগ্রেস পালটা ছবি প্রকাশ করে সেই অভিযোগের বিপক্ষে প্রমাণ পেশ করেছে। ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের সমাধিতে কমলনাথ তো ছিলেন, কিন্তু একজন বাদে কোনও বিজেপি নেতা ছিলেন না, পালটা অভিযোগ জানিয়েছে কংগ্রেস। ইতিহাসের পাতার সেই রাণী আবার স্বমহিমায় ভারতীয় রাজনীতিতে। তবে এটাও ঠিক, কংগ্রেস ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের ইস্যুটিকে নিয়ে আলাদা ভাবে চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে। বিজেপির হাতে বারতি অস্ত্র তারা তুলে দিতে রাজি নয়।