কলকাতা: এই ব্রহ্মাণ্ডে যে কত রহস্য লুকিয়ে আছে তার কোনও ইয়ত্তা নেই। প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু নতুন তথ্য সামনে আসে, যা শুনে বা দেখে সকলে স্তব্ধ হয়ে যায়। পৃথিবী ছাড়াও সৌরজগতের বাকি বিষয় নিয়ে কৌতূহলের কোনও শেষও নেই। আর সব সময়ে সেই কৌতূহল নিরসন করতে কাজ করতে থাকে নাসা। মানুষের যে বিষয় নিয়ে কৌতূহল তার মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য হল চাঁদ। সেই চাঁদেই জলের সন্ধান মিলেছে এবং দাবি করা হচ্ছে তার বেশিরভাগের উৎস হচ্ছে পৃথিবী! এই নিয়ে পরীক্ষা করতেই প্রচেষ্টা শুরু করেছে নাসা।
আরও পড়ুন- ঘণ্টায় ৩৫ হাজার কিমি বেগে ধেয়ে আসছে মহাকাশের বৃহত্তম ধূমকেতু, আকার জানাল নাসা
চলতি বছরেই এই নিয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে তাদের তরফ থেকে। Artemis I মিশনের পরিকল্পনা করছে নাসা। আসলে এই মিশনের মাধ্যমে একটি মহাকাশযান পাঠানো হবে। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে তাতে কোনও মহাকাশচারী থাকবে না। নাসা জানাচ্ছে, যখন মহাকাশচারীদের নিয়ে মহাকাশযান যাবে তখন কোনও দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সেই কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চাঁদে সত্যিই জল রয়েছে কিনা তা খোঁজ করাই এই মহাকাশযানের মূল উদ্দেশ্য। বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছেন, চাঁদে জল আছে এবং সেই জলের বেশিরভাগের উৎস পৃথিবী। তাই অবশ্য ভাবে এই সফর যে তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, চাঁদের এক মেরু অঞ্চলে ৩ হাজার ৫০০ কিউবিক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জলের সন্ধান পাওয়া গেছে। সাময়িক গবেষণার পর প্রায় নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে যে, এই জলের উৎস পৃথিবী। এখানের বায়ুমণ্ডল থেকেই ওই জল এসেছে। চাঁদে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের স্তর রয়েছে বলেও দাবি করা হচ্ছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছে ‘আলাস্কা ফেয়ারব্যাঙ্কস জিওফিজিক্যাল ইন্সটিটিউট’। তাদের বক্তব্য, পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্তর থেকে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন আয়ন বের হচ্ছে এবং সেখান থেকেই চাঁদে জল আসছে।
আরও পড়ুন- কয়েক লক্ষ বছরের পথ ঘুরে পৃথিবীর কাছে ধেয়ে আসছে এক আগন্তুক
এর আগে একটি রিপোর্ট শনি গ্রহের, বৃহস্পতি গ্রহের চাঁদ নিয়েও অবাক করা তথ্য দিয়েছে। সম্প্রতি একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, পৃথিবীর মহাসাগরগুলিতে যতটা জল রয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি রয়েছে বৃহস্পতির অনেকগুলি চাঁদের মধ্যে একটিতে৷ যার নাম ইউরোপা৷ শুধু জলই নয়, প্রাণের সৃষ্টি ও বিকাশের জন্য যে রাসায়নিক উপাদানগুলি প্রয়োজন, সেটাও আছে সেখানে। আবার শনির চাঁদ ‘এনসেলাডাস’ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। নাসা দাবি করেছে যে, ‘এনসেলাডাসে’ প্রাণ থাকতে পারে কারণ সেখানে নাকি জলের সন্ধান মিলেছে। মূলত শনি গ্রহের এই চাঁদ মোটা বরফের আস্তরণে ঢাকা। সেখানে একটি ফাটল সৃষ্টি হয়েছে তা তাতেই নাকি জলের মতো বস্তু দেখা গিয়েছে। নাসা দাবি করছে, এই জলের মতো পদার্থ আসলে ৯৮ শতাংশ জল।