কলকাতা: শস্য শ্যামলা পৃথিবীর রূপ-রসে মোহিত মানুষ৷ তবে প্রকৃতির বৈচিত্র অপার৷ এখানে রয়েছে পাহাড়, নদী, মরুভূমি আরও কত কী! কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের চেয়ে উন্নততর কোনও প্রাণীর অস্তিত্ব যদি থেকে থাকে, তাহলে তাদের পছন্দের বাসস্থান হবে লালগ্রহ অর্থাৎ মঙ্গল৷ সেখানে বসতি গড়তে প্রয়োজন শুধু জলের৷ পৃথিবীর পড়শি গ্রহের বুকে জলের খোঁজ করতে গিয়েই উঠে এল এইক বিস্ময়কর তথ্য৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, এক সময় জলময় ছিল মঙ্গল৷ আচমকাই তা শুকিয়ে খটখটে হয়ে যায়৷ কিন্তু কেন শুকিয়ে গেল মঙ্গলের জল? সেই কারণও খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা৷
আরও পড়ুন- মহাকাশ থেকে ক্রমাগত ভুল তথ্য পাঠাচ্ছে নাসার যান! রহস্য ভেদে মরিয়া বিজ্ঞানীরা
মঙ্গল আদৌ মানুষের বাসযোগ্য কিনা, তা জানতে লালগ্রহের মাটিতে অনুসন্ধান চালাচ্ছে নাসার মঙ্গলযান ‘কিউরিওসিটি’৷ যার মধ্যে রয়েছে রোভার ‘পার্সিভিয়ারেন্স’-এর উচ্চপ্রযুক্তির লেন্স৷ এর সাহায্যে ‘কিউরিওসিটি’র সঙ্গে থাকে ছোট্ট ল্যাবরেটরিতেই চলছে মঙ্গলের মাটি পরীক্ষার কাজ৷ পড়শি গ্রহের মেরুপ্রদেশ, নিরক্ষীয় অঞ্চলের আবহাওয়া কেমন, তা খতিয়ে দেখছে নাসার মঙ্গলযান। অনুসন্ধান চালাতে গিয়েই কিউরিওসিটির চোখে ধরা পড়েছে, মঙ্গলের বুকে একদা নদীর অস্তিত্ব৷ তবে বহুকাল আগেই তা শুকিয়ে গিয়েছে। এখন পড়ে রয়েছে শুধু খা খা করা নদীখাত। আর সেই ছবি দেখেই প্রশ্ন জেগেছে, কীভাবে শুকিয়ে গেল মঙ্গলের জল? জবাব পেতে নিরন্তর কাজ চালাচ্ছে নাসার মঙ্গলযান।
প্রাথমিক ভাবে বিজ্ঞানীদের অনুমান ছিল, মহাবিস্ফোরণের জেরে প্রবল তাপ তৈরি হয়৷ আর এর ফলেই শুকিয়ে যায় লালগ্রহের জল। এবার নদীর জল শুকিয়ে যাওয়ার পিছনে আরও একটি তত্ত্ব খুঁজে পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা মনে করছেন, মঙ্গলের আকাশে খুব পাতলা তুষারের মেঘ তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে গ্রিন হাউজ গ্যাস জমতে শুরু করে। কার্বন-ডাই-অক্সাইডের প্রভাবে লালগ্রহের নদী শুকিয়ে যায়।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী এডুইন কাইটের কথায়, “মঙ্গল নিয়ে মানুষের মধ্যে নানারকম ধারণা রয়েছে। কিন্তু আমদের এখনও জানা নেই যে কী ভাবে এই গ্রহের আবহাওয়ায় অদ্ভূতভাবে বদলে গেল। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট, এখানে বাসযোগ্য পরিবেশ থেকে আমূল পরিবর্তন হয়েছে।’’ আবার একদল বিজ্ঞানী বলছেন, মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে তৈরি হচ্ছিল হাইড্রোজেন গ্যাস। কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সঙ্গে এর রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে প্রচুর পরিমাণে বাষ্প তৈরি হয়। যা নদীর জল শুকিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।
অন্যদিকে, লালগ্রহের মাটিতে নতুন ইতিহাস গড়ে আরও দ্রুতগামী রোটোক্রাফট। শুধু তাই নয়, আগের চেয়ে অনেক বেশি দূরত্ব পাড়িও দিল এই উড়ন্ত যান। ১২ মাইল প্রতি ঘণ্টা বেগে ২ হাজার ৩১০ ফুট উড়ল রোটোক্রাফট। মঙ্গলের মাটি থেকে ৩৩ ফুট উঁচুতে উড়ল এই যান। উড়ানের মধ্যেই এর গতিবেগ বাড়াতে-কমাতে সক্ষম হন বিজ্ঞানীরা।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>