নয়াদিল্লি: বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বছরের পর বছর সহবাস এবং পর পর ১৪ বার জোর করে গর্ভপাত করানো। দীর্ঘ আট বছর ধরে লিভ ইন পার্টনারের এই নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে সম্প্রতি আত্মঘাতী হয়েছেন দিল্লির ৩৩ বছর বয়সী এক মহিলা। পুলিশ সূত্রে খবর, দক্ষিণ দিল্লির যাইতপুরের বাসিন্দা ঐ মহিলা আত্মঘাতী হওয়ার আগে এই সমস্ত কথা তার সুইসাইড নোটে লিখে গিয়েছেন। ওই নোটেই উল্লেখ রয়েছে, কিভাবে বছরের পর বছর ধরে ওই মহিলার উপর অত্যাচার চালিয়েছে তার সঙ্গী।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে দক্ষিণ পূর্ব দিল্লির ডেপুটি কমিশনার ইশা পান্ডে জানিয়েছেন, গত পাঁচ জুলাই, দিল্লি পুলিশের পিসিআর প্রথম ওই মহিলার আত্মহত্যার খবর পায়। সাথে সাথে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং ওই মহিলার ঘর থেকেই তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাকে সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে দিল্লির এইমসে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানেই ওই মহিলাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এরপর পুলিশ ওই মহিলার ঘর সার্চ করে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। তারপরেই জানা যায় ওই মহিলা সাত থেকে আট বছর তার স্বামীর থেকে আলাদা হয়ে অন্য এক পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে লিভ ইন করতেন। এরপরেই ওই ঘর থেকে উদ্ধার হয় মৃত ওই মহিলার সুইসাইড নোটটি যেখানে তিনি পুরো ঘটনাটি লিখে গিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, হিন্দিতে লেখা ওই সুইসাইড নোটে মহিলা জানিয়েছেন, তার স্বামীও তার ওপর অত্যাচার চালাতেন। সেই কারণেই তিনি সাত থেকে আট বছর আগে তার থেকে আলাদা হয়ে যান এবং অন্য এক পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে লিভ ইন করতে শুরু করেন। সেই সঙ্গীই প্রথমে তাকে বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন ওই মহিলার সঙ্গে সহবাস করেছে। এই কারণে অইমহিলা বারবার গর্ভবতী হয়েছেন এবং তাকে জোড় করে গর্ভপাত করানো হয়েছে। ওই চিঠিতেই তিনি জানিয়েছেন যে, গত আট বছরে মোট ১৪ বার গর্ভবতী হয়েছেন তিনি এবং প্রতিবারই তাকে বলপূর্বক গর্ভপাত করাতে বাধ্য করা হয়েছে। সেই অবসাদেই ওই মহিলা সম্প্রতি আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
দিল্লি পুলিশ ওই সুইসাইড নোট উদ্ধারের পরেই অভিযুক্তের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। একইভাবে মহিলার স্বামীর সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরেও জানা গিয়েছে যে দীর্ঘ ৭-৮ বছর তার সঙ্গে তার স্ত্রীর কোনরকম যোগাযোগ ছিল না।