পটনা: বিহার বিধানসভা প্রথম দফার ভোটগ্রহণের ১,০৬৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৩ শতাংশের বিরুদ্ধে রয়েছে খুন, খুনের চেষ্টা ও ধর্ষণের মতো গুরুতর ফৌজদারি মামলা৷ বিহার নির্বাচনের প্রথম দফায় প্রার্থীদের নিয়ে প্রকাশ করা স্ক্রুটিনি রিপোর্টে এমনটাই জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেমিক্র্যাটিক রিফর্মস৷ মোট ১,০৬৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ১,০৬৪ জন প্রার্থীর প্রোফাইল প্রকাশ করেছে তারা৷ সেখানেই উঠে এসেছে এই তথ্য৷
হাতে মাত্র গুণে গুণে এক সপ্তাহ সময়। ২৮ অক্টোবর বিহার নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। এবার বিহারে প্রথম দফায় প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নামছেন ১,০৬৬ জন প্রার্থী। তারমধ্যেই এডিআরের চমকে দেওয়ার মতো রিপোর্ট সামনে এসেছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে ফৌজদারি মামলা থাকা সবচেয়ে বেশি প্রার্থী রয়েছে লালুপ্রসাদ যাদবের দল আরজেডিতে৷ এইরকম ২২ জনকে প্রার্থী করেছে লালুপ্রসাদের দলে৷ দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে সদ্য প্রয়াত রামবিলাশ পাশোয়ানের দল এলজেপি৷ লোকজনশক্তি পার্টির ২০ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর ফৌজদারি মামলা৷ বিজেপির রয়েছে ১৩ জন দাগী প্রার্থী৷ শাসকদল জেডিইউয়ের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যাটা ১০। সবচেয়ে কম ফৌজদারি মামলা রয়েছে কংগ্রেসের প্রার্থীদের, তাদের ৯ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর ফৌজদারি মামলা৷
রাজনীতিকে স্বচ্ছ করে তুলতে প্রয়াস দীর্ঘদিন ধরেই কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করা প্রার্থীদের, তাঁদের বিরুদ্ধে থাকা ফৌজদারী মামলা সহ বিস্তারিত হলফনামায় উল্লেখ করতে বলা হয়েছে শীর্ষ আদালতের তরফে। গতমাসে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, তিন পর্যায়ে তাঁদের বিরুদ্ধে থাকা ফৌজদারি মামলার বিস্তারিত সামনে আনতে হবে, প্রথম: মনোনয়ন প্রত্যাহারে শেষদিনের পর থেকে প্রথম চারদিনের মধ্যে৷ দ্বিতীয়: পঞ্চম থেকে অষ্টম দিনের মধ্যে৷ তৃতীয়: নবম দিন থেকে প্রচারের শেষদিনের মধ্যে৷ নির্বাচন কমিশনের যুক্তি, তিন পর্যায়ে এই ঘোষণার ফলে ভোটারদের, তাঁদের পছন্দ বেছে নিতে সমস্যা হবে না এবং “স্বচ্ছ প্রার্থী” কে নির্বাচিত করতে পারবেন।
ফৌজদারী মামলা থাকা নেতাদের প্রার্থী করার ব্যাপারে উপযুক্ত কারণ উল্লেখ করতে বলা হয়েছে রাজনৈতিকত দলগুলিকে, যদিও এডিআরের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলছে না তারা। সাংবাদমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে এডিআরের তরফে বলা হয়েছে, ‘‘২০২০-এর ১৩ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট, এই ধরণের মামলা থাকা নেতাদের প্রার্থীদের করা এবং যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা নেই, তাঁদের প্রার্থী না করার কারণ জানতে চেয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির থেকে। সেক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতা, তাঁর রাজনৈতিক সাফল্য বা গ্রহণযোগ্যতার মতো বিষয়গুলিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। যে কারণে, জনপ্রিয়তা, সমাজসেবার কাজে যুক্ত থাকা, ফৌজদারি মামলা রাজনৈতিক উদ্দ্যেশ্য প্রণোদিত এই ধরণের কথা শোনা যায় না এবং ভাল প্রার্থী বাছাই করা হয়৷ এই প্রবণতার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচনী সংস্কারে আগ্রহী নয় এবং আমাদের গণতন্ত্র পরিচালিত হবে আইনসভার সেই সমস্ত সদস্যদের হাতে, যাঁরা নিজেরাই আইনভঙ্গকারী৷’’ এডিআরের যুক্তি যে অহেতুক নয়, তার প্রমাণ মিলেছে প্রথম দফার আরজেডি প্রার্থী তালিকায়৷ তাদের মোকামায় প্রার্থী অনন্ত সিং এর বিরুদ্ধে ৩৮টি মামলা রয়েছে। যদিও শুধুমাত্র জনপ্রিয়তার কারণ দেখিয়ে তাঁকে প্রার্থী করেছে লালু প্রসাদ যাদবের দল৷