প্রলয়ঙ্কর ঝড় উঠেছে সূর্যে, একের পর এক বিস্ফোরণ, আগুনে ঝলসে যাচ্ছে শুক্র

প্রলয়ঙ্কর ঝড় উঠেছে সূর্যে, একের পর এক বিস্ফোরণ, আগুনে ঝলসে যাচ্ছে শুক্র

52a87739cf7c8bde8a7e1f736e60b785

নয়াদিল্লি: অশান্ত সূর্য৷ সৌরঝড়ে তোলপাড় পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র৷ ঘটে চলেছে একের পর এক বিস্ফোরণ। বেরচ্ছে গনগনে আগুন৷ সেই আঁচ ছড়িয়ে পড়ছে সৌরজগতেও। ছিটকে আসছে সৌরকণা ও সৌরবায়ু৷ সূর্যের বিস্ফোরণের ধাক্কা এসে লাগছে শুক্র গ্রহের গায়ে। এক সপ্তাহে এই নিয়ে দু’বার সূর্যের তেজে পুড়ল পৃথিবীর পড়শি গ্রহ।

আরও পড়ুন- ‘ডার্ট’-এর প্রহারে কুপোকাত দানব গ্রহাণু, পৃথিবীকে বাঁচাতে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ বানাল নাসা

মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক দিনে সূর্যের মধ্যে বিভিন্ন গ্যাসের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে। ধারাবাহিক ভাবে ছোট-বড় বিস্ফোরণ ঘটে চলেছে সূর্যের অন্দরমহলে। এই বিস্ফোরণের ধাক্কায় গত ১ সেপ্টেম্বর শুক্রের কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান ইউরোপের একটি মহাকাশযান (অরবিটার) মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর এবার সরাসরি শুক্রের গায়ে এসে পড়ল সূর্যের আগুনের গনগনে আঁচ। নাসার স্টিরিও-এ মহাকাশযানের ক্যামেরায় এই মহাজাগতিক প্রলয়ের দৃশ্য স্পষ্ট ধরা পড়েছে।

নাসার স্টিরিও স্পেসক্রাফ্টে দেখা গিয়েছে, গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে সূর্যে তুমুল ঝড় ওঠে৷ পর পর বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে। আগুনের রশ্মি ছিটকে বেরতে শুরু করে৷ তবে আগুনের এই গোলা পৃথিবীর অবস্থানের বিপরীতে ছড়িয়ে পড়ে। আর সেই দিকেই ছিল শুক্র। সূর্যের বিস্ফোরণের ধাক্কায় একেবারে কেঁপে ওঠে পৃথিবীর পড়শি গ্রহ৷ এটি সূর্যের অভ্যন্তরীণ বিস্ফোরণের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী বলেই বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ। 

সাধারণত সৌররশ্মির তেজ যতটা হয়, সূর্য থেকে ছিটকে আসা কণা বা সোলার পার্টিকলদের শক্তি ও বেগ দুটোই হয় তার চেয়ে বহুগুণ বেশি। এই সোলার পার্টিকলদের স্রোত কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তা জানিয়েছে নাসা। সূর্যের বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে বাইরের স্তরটি হল করোনা৷  সেখান থেকেই প্রচণ্ড গতিতে সৌরকণাগুলি ছিটকে বেরিয়ে আসে। যাকে বলা হয় ‘করোনাল মাস ইজেকশন’৷ ১০০ কোটি বা তার চেয়েও বেশি পরমাণু বোমা এক সঙ্গে ফাটলে যে পরিমাণ শক্তির জন্ম হয়,  এগুলি ততটাই শক্তিশালী।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, সূর্যের এই অস্থিরতার ফল শুধু শুক্রকেই সহ্য করতে হবে না, বিপদে পড়তে পারে সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহও। সূর্যের এই বিস্ফোরণের তেজে কয়েক মুহূর্তে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে যে কোনও কৃত্রিম উপগ্রহ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সূর্যের এক কোণে বড়সড় একটি ‘স্পট’ বা কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। সেখান থেকেই এই প্রলয়ঙ্কর ঝড়ের উৎপত্তি।