নিউ ইয়র্ক: মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা চন্দ্র অভিযানের জন্য রকেট পাঠাতেই মাথাচাড়া দিয়েছে একটা প্রশ্ন৷ তবে কি আরও একবার চাঁদের মাটি ছোবে মানুষ? মানুষের চন্দ্রাভিযান নিয়ে যখন উৎকণ্ঠায় বিশ্ব, তখন নাসার দাবি আর বেশি দিন নয়, এবার চাঁদে বসবাস করবে মানুষ৷ এবং সেটা হবে ১০ বছরের মধ্যে৷
আরও পড়ুন- মহাকাশে নয়া নজির, দেশের প্রথম বেসরকারি রকেট ‘বিক্রম-এস’-এর সফল উৎক্ষেপণ
সম্প্রতি নাসা ওরিয়ন লুনার স্পেসক্র্যাফট প্রোগ্রাম নামের একটি চন্দ্রাভিযান শুরু করেছে৷ সেই অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিজ্ঞানী হাওয়ার্ড। ১৯৭২ সালের পর এই অভিযানে ‘আর্টেমিস’ নামের রকেটের মাধ্যমে ফের একবার চাঁদে মানুষ পাঠানোর চেষ্টা করছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষনা সংস্থার বিজ্ঞানীরা।
গত সপ্তাহেই চাঁদের পথে পাড়ি দিয়েছে আর্টেমিস-১। আমেরিকার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে এই মহাকাশযানের সফল উৎক্ষেপণ করা হয়৷ ‘আর্টেমিস-১’-এর উপরে বসানো ছিল ‘ওরিয়ন’ নামের একটি মহাকাশযান। আপাতত এই অভিযান যাত্রীবিহীন৷ তবে অভিযান সফল হলেই পরের অভিযানে এই মহাকাশযানে চেপে চাঁদে পাড়ি দেবেন মহাকাশচারীরা। এই অভিযানের মূল লক্ষ্য হল, চাঁদের মাটিতে নামার আগে সম্ভাব্য ‘ল্যান্ডিং সাইট’গুলিকে চিহ্নিত করা। গত বুধবার শুরু হয় এই অভিযান৷ মিশন ‘আর্টেমিস-১’ সফল হয়েছে বলেই নাসা সূত্রে খবর।
সূত্রের খবর, ওই মহাকাশযানে করে চাঁদের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে মানুষের ডামি৷ চাঁদের বুকে মহাকাশচারীরা পা রাখার আগে পরীক্ষামূলকভাবে এই কাজ করা হয়েছে বলে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে খবর। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে চাঁদের কক্ষপথে ঢুকে পড়বে এই মহাকাশযান৷ সেখানে নামানো হবে একটি ‘ক্রু ক্যাপসুল’৷ সরাসরি এই মহাকাশযানটি চাঁদের মাটিতে নামবে না৷ সেই জন্য যে বিশেষ যানটি ব্যবহার করা হবে, তার নামই ক্রু ক্যাপসুল৷ ওই ক্যাপসুলের মধ্যে কোনও মানুষ থাকবে না। থাকবে তিনটি ম্যানিকুইন৷ মানুষকে চাঁদে পাঠানো হলে সেখানে তাদের কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে, সেই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতেই এই ম্যানিকুইন পাঠানো হয়েছে। জানা যাচ্ছে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই ক্যাপসুল চাঁদের কক্ষপথে ঘুরে চলতি বছরের ডিসেম্বরে ফের পৃথিবীতে ফিরে আসবে। প্রশান্ত মহাসাগরে ওই ক্যাপসুলকে ফিরিয়ে আনা হবে৷
এই অভিযান প্রসঙ্গে হাওয়ার্ড জানান, ‘‘নিশ্চিত ভাবেই এই দশকের মধ্যে মানুষ চাঁদের মাটিতে বসবাস করতে পারবে। আমরা কত দিন চন্দ্রপৃষ্ঠে থাকব, সেই উপর নির্ভর করে তৈরি করা হবে বাসস্থান, চাঁদের মাটিতে চলবে রোভারও৷’’ মানুষ যদি চাঁদের মাটিতে ঘাঁটি গাড়তে পারে, দীর্ঘদিন সেখান বসবাস করতে পারে, তাহলে মহাকাশ সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষণা করার সুযোগ আরও বাড়বে বলেই দাবি তাঁর। মহাকাশবিজ্ঞানীর কথায়,আগামী দিনে যখন দীর্ঘ সময় মহাকাশ অভিযান চলবে, তখন এই অভিজ্ঞতা কাজে আসবে৷ বিষয়টিকে বলা হচ্ছে ‘ডিপ স্পেস’ অভিযান। অনেকেই মনে করছেন, বিভিন্ন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ভবিষ্যতে মঙ্গলগ্রহে বসতি স্থাপনের যে পরিকল্পনা করছেন, সে দিকেই ইঙ্গিত করেছেন গাওয়ার্ড৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>