ওয়াশিংটন: কৃত্রিম গর্ভে জন্ম নেবে মানবসন্তান! শিশুর গায়ের রং থেকে শুরু করে বুদ্ধিমত্তা সবটাই পছন্দ করা যাবে নিজের মতো! ভবিষ্যতের কথা জানিয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন ইয়েমেনের মলিকিউলার বায়োটেকনোলজিস্ট হাশেম আল-ঘাইলি।
শিশু তৈরির এক গবেষণাগারের অ্যানিমেশন ভিডিও প্রকাশ করেছেন হাশেম। যা এই মুহূর্তে ভাইরাল। বিজ্ঞানীর প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, গবেষণাগারের মধ্যে রয়েছে হাজার হাজার কাচের গোলকের মতো কিছু যন্ত্র। যার ভেতরে তৈরি হচ্ছে মানবশিশু। কল্পনাপ্রসূত এই গবেষণাগারটির নাম এক্টোলাইফ। বিজ্ঞানীর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এই গবেষণাগারে থাকবে মোট ৭৫টি কক্ষ। প্রতিটি কক্ষে থাকবে ৪০০টি কৃত্রিম গর্ভ। অর্থাৎ সব মিলিয়ে গবেষণাগারে একইসঙ্গে ৩ হাজার শিশুর জন্ম দেওয়া সম্ভব হবে।
কাচের গোলকের মতো এই যন্ত্রগুলির নাম গ্রোথপড। যা কৃত্রিম গর্ভের কাজ করবে। এর ভিতর আইভিএফ পদ্ধতিতে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন ঘটিয়ে তৈরি করা হবে ভ্রূণ। সেই ভ্রূণ বড় হয়ে উঠবে ভিতরে। জন্মের আগে পর্যন্ত শিশুর রক্তচাপ থেকে হৃদ্স্পন্দন, সবই মাপা যাবে এই যন্ত্রে। বিজ্ঞানীর দাবি, এই পদ্ধতিতে নিজের সন্তানের মধ্যে কোন কোন গুণ দেখতে চান সেটাও শিশুর জন্মের আগেই ঠিক করতে পারবেন বাবা-মা। কৃত্রিমভাবে জিনগত পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে ঠিক করা যাবে হবু সন্তানের গায়ের রং, উচ্চতা শারীরিক গঠন, গলার স্বর কিংবা বুদ্ধিমত্তার মতো বিষয়গুলি।
কৃত্রিম গর্ভে থাকাকালীন সন্তানের শারীরিক তথ্যের যাবতীয় খুঁটিনাটি মোবাইলের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন হবু বাবা-মায়েরা। নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে দেখতে পাবেন ভ্রুনের বেড়ে ওঠা… একটা নির্দিষ্ট সময় পর বাইরের শব্দ উপলব্ধি করতে পারে গর্ভস্থ সন্তান। কৃত্রিম গর্ভেও তার ব্যবস্থা রয়েছে। চাইলে বাবা-মায়েরা নিজেদের কণ্ঠস্বর রেকর্ড করে শিশুর কানে পৌঁছে দিতে পারেন৷
গোটা বিষয়টি দেখে কোনও হলিউড ছবির অংশ মনে হলেও বাস্তবে এটা সম্ভব বলেই দাবি করেছেন হাশেম। তাঁর মতে, শারীরিক জটিলতার কারণে যে দম্পতিরা সন্তান নিতে পারছেন না ও যে যে দেশ জনসংখ্যা হ্রাসের সমস্যায় ভুগছে, তাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী হতে পারে এই ব্যবস্থা। অনেক জিনগত রোগ নির্মূল করা যাবে এই পদ্ধতিতে। প্রতি বছর সারা পৃথিবীতে সন্তান প্রসব করতে গিয়ে লক্ষ লক্ষ মহিলার মৃত্যু হয় । বিভিন্ন জটিলতায় মৃত্যু হয় বহু নবজাতকেরও। নতুন পদ্ধতিতে সেই সমস্যা থাকবেনা।
কৃত্রিম ভাবে সন্তান উৎপাদন নিয়ে বিজ্ঞানী আশাবাদী হলেও, এক্ষেত্রে নানা রকম নৈতিক জটিলতা রয়েছে। প্রকৃতিকে এড়িয়ে মানবদেহে জিনগত বদল আনা বিবর্তনের পথে ঝুঁকির কাজ হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। আবার, কোনও মানুষকে জন্মের আগেই গবেষণার বস্তু করে তোলা নিয়েও আপত্তি রয়েছে নানা মহলে। তাই বিষয়টি এখনও আইনসিদ্ধ নয়। তবে আইনি সম্মতি পেলে এই দিন দেখার জন্য বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবেনা বলেই মত হাশেমের।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″ height=”315″ frameborder=”0″>