ব্যাপক ক্রস ভোটিং, ‘ফার্স্ট বয়’ অসম!

ব্যাপক ক্রস ভোটিং, ‘ফার্স্ট বয়’ অসম!

নয়াদিল্লি: বিপুল ভোটে জিতে প্রতিদ্বন্দ্বী তথা বিরোধী পদপ্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে রীতিমতো গোহারা হারিয়ে বৃহস্পতিবার দেশের ১৫ তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন দ্রৌপদী মুর্মু। সম্ভাবনা ছিলই। রাজনীতিবিদের একাংশ কার্যত নিশ্চিত ছিলেন যে এবার রাইসিনা মুর্মুর দখলেই যাবে। তবে কত ভোটের ব্যবধানে জয় পাবেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন রাজ্যপাল সেটাই ছিল দেখার বিষয়। কারণ আশঙ্কা করা হচ্ছিল বিজেপির বিধায়ক সংসদরা তো মুর্মুর পক্ষে ভোট দেবেনই, সঙ্গে অন্যান্য দল থেকেও আসতে পারে বিপুল ক্রস ভোটিং। এখন দেখার বিষয় ছিল বিরোধী শিবিরের কতজন ভোটারকে ভাঙ্গিয়ে নিয়ে মুর্মুর পক্ষে ভোট দেওয়াতে পারে বিজেপি নেতৃত্ব। সে ক্ষেত্রে হিসাব বলছে ক্রস ভোটিংয়ের ব্যাপারে ভালই সাফল্য পেতে বিজেপি। গোটা দেশে মোট ১২৬ জন বিধায়ক এবং ১৭ জন সাংসদ দ্রৌপদীর পক্ষে ক্রস ভোট করেছেন।

প্রসঙ্গত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোট গণনা দ্বিতীয় দফার পরেই কার্যত পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল গোটা চিত্রটি। তখনই দেখা যায় ভোটের নিরিখে যশবন্তকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছেন মুর্মু। একই সঙ্গে পেয়েছেন বিপুল ক্রস ভোট। জানা যাচ্ছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্রৌপদী পেয়েছেন ৬৪ শতাংশ ভোট। যেখানে যশমন সিনহার পক্ষে যায় ৩৬ শতাংশ ভোট। ক্রস ভোটিংয়ের চিত্রটা এখানেই পরিষ্কার হয়েছে। সবথেকে বেশি ক্রস ভোটিং হয়েছে অসমে। নেপথ্যে সেই হেমন্ত বিশ্ব শর্মা। জানা যাচ্ছে অসম কংগ্রেস এবং বদরুদ্দিন আজমলের এআইইউডিএফের (AIDUF) মোট ২২ জন বিধায়ক ভোট দিয়েছেন দ্রৌপদী মুর্মুর পক্ষে। ক্রস ভোটিংয়ে দ্বিতীয় স্থানে মধ্যপ্রদেশ। সেখানে ১৯ জন বিধায়ক ক্রস ভোট করেছেন। এদের প্রায় সকলেই কংগ্রেসের আদিবাসী বিধায়ক। ফলে এখানে কাজ করেছে আদিবাসী ফ্যাক্টর। ক্রস ভোটিংয়ে তৃতীয় স্থানে মহারাষ্ট্র। এখনও খাতায় কলমে বিরোধী শিবিরে আছেন এমন ১৬ জন বিধায়ক ক্রস ভোট করেছেন। এছাড়া মোদির গড় গুজরাটেও জনা দশেক কংগ্রেস বিধায়ক ক্রস ভোট করেছেন। গুজরাটে এ বছরের শেষেই ভোট। অথচ সেই রাজ্যেও বিধায়কদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে হাত শিবিরের চিন্তা সবথেকে বাড়িয়েছে ঝাড়খণ্ড। সেরাজ্যে বিরোধীদের প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে ভোট দিয়েছেন মাত্র ৯ জন বিধায়ক। হেমন্ত সোরেনের দল জেএমএম দ্রৌপদী মুর্মুর পক্ষে ভোট দেবে সেটা জানাই ছিল। কিন্তু দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের প্রায় অর্ধেক বিধায়ক ক্রস ভোট করেছেন ঝাড়খণ্ডে। 

তবে এতকিছুর পরেও প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে কিন্তু বেশ কিছুটা পিছিয়ে মুর্মু। কারণ সাম্প্রতিককালে তিনিই সব থেকে কম শতাংশ ভোট পেয়ে রাইসিনা দখল করলেন। গত এক দশকে এক্ষেত্রে একেবারে প্রথম স্থানে রয়েছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, কারণ তিনি পেয়েছিলেন ৬৯ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে ইউপিএ জামানার রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিল ও এনডিএ শিবিরের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ঝুলিতে এসেছিল ৬৬ শতাংশ ভোট। সেক্ষেত্রে মুর্মুর প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ ৬৪ শতাংশ। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − one =