অবিবাহিত বলে গর্ভপাত করাতে পারবেন না, এমন হয় না: সুপ্রিম কোর্ট

অবিবাহিত বলে গর্ভপাত করাতে পারবেন না, এমন হয় না: সুপ্রিম কোর্ট

নয়াদিল্লি: ফের ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের। ২৪ সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পরেও এক অন্তঃসত্ত্বা অবিবাহিত তরুণীকে গর্ভপাতের অনুমতি দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এর সঙ্গেই শীর্ষ আদালতের মত, শুধুমাত্র অবিবাহিতা বলে একজন নারীকে গর্ভপাতের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। সেক্ষেত্রে আদালতের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যদি ওই তরুণীর জীবনের ঝুঁকি না থাকে তাহলে গর্ভপাত করাতে কোন বাধা থাকবে না তাঁর।

এই রায়ে বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়েছে, ‘ভারতের সংসদ কখনই চায় না, একজন মহিলা অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থার মধ্য দিয়ে যান। সেই কথা মাথায় রেখেই আমরা রায় ঘোষণা করছি। আবেদনকারী একজন অবিবাহিতা বলেই তাঁকে গর্ভপাতের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। একজন মহিলা বিবাহিত হোন বা অবিবাহিত, তার উপরে ভিত্তি করে সংসদীয় আইনের কোনও বদল ঘটানো হয় না।’ সেই সঙ্গে আদালত মনে করিয়ে দিয়েছে, ২০২১ সালে গর্ভপাত আইন সংশোধন করে ‘স্বামী’র বদলে ‘সঙ্গী’ লেখা হয়েছে। অর্থাৎ অবিবাহিত মহিলাদেরও গর্ভপাতের সুবিধা দেওয়ার জন্যই আইন পালটানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ২৫ বছর বয়সে এক তরুণী গর্ভপাতের আর্জি নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেক্ষেত্রে তার গর্ভে থাকা সন্তানের বয়স ২৪ সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। ওই তরুণীর আর্জি ছিল, তিনি স্বেচ্ছায় অন্তঃসত্ত্বা হলেও পরে তার সঙ্গী তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন। এক্ষেত্রে কুমারী মা হিসেবে ওই সন্তানকে জন্ম দিলে তিনি মানসিক যন্ত্রণার পাশাপাশি সামাজিক কলঙ্কেরও শিকার হবেন। আর তাই তিনি এই পরিস্থিতিতে মা হতে একেবারেই প্রস্তুত নন। কিন্তু দিল্লি হাইকোর্ট তাঁর গর্ভপাতের দাবি খারিজ করে দিয়ে জানায়, ‘২০০৩ সালের গর্ভপাত আইন অনুযায়ী কোন ধর্ষিতা কিংবা নাবালিকা অবস্থায় অন্তঃস্বত্বা হয়ে পড়লে অথবা কেউ যদি দাম্পত্য সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে আবেদন করে তাহলে তাঁকে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে যেহেতু ২৪ সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে তাই এখন ওই তরুণীকে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া মানে শিশুটিকে হত্যার শামিল।’ এরপরেই হাইকোর্টের রায়কে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই তরুণী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − 5 =