কলকাতা: তাঁকে ঘিরে গড়ে উঠেছে আমাদের সৌরমণ্ডল৷ তিনিই সৌরজগতের মধ্যমনি৷ কিন্তু তিনি কি এখন রুষ্ট? তার রোষাগ্নির প্রভাব ভালোমতোই পড়তে চলেছে পৃথিবীর উপরে। টোলিস্কোপে চোখ রেখে মহাকাশবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ফের ফুঁসতে শুরু করেছে সূর্য। সেই করোনাল মাস ইজেকশনের বড় প্রভাব এসে পড়তে পারে ভূপৃষ্ঠের উপরে। তবে শুধু আমাদের নীল গ্রহ নয়, সৌরমণ্ডলের একাধিক গ্রহর উপরে সূর্যের এই অনলশিখার প্রভাব পড়তে চলেছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবার সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র থেকে নির্গত করোনাল মাস ইজেকশনের প্লাজমা পার্টিকল জিওম্যাগনেটিক ঝড় তুলবে সূর্যের বাইরে। যার প্রভাবে ছিন্ন হতে পারে বেতার তরঙ্গ৷ উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, ৭ মে সূর্যের গায়ে একটি নতুন স্পট তৈরি হয়েছে। যার নাম- reversed-polarity sunspot AR3296 । এই করোনাল মাস ইজেকশন থেকেই প্লাজমা এবং ম্যাগনেটিক ফিল্ডের একটি বড় বিস্ফোরণ ঘটে। সূর্যের বহির্স্তরকে বলা হয় করোনা। যা মূলত তৈরি হয়েছে উত্তপ্ত প্লাজমা থেকে৷
আমাদের পৃথিবীতে যেমন অ্যাটমস্ফিয়ার আছে, তেমনই সূর্যেরও আছে৷ সৌরপৃষ্ঠ বা সারফেস ও তার উপরের স্তরকে বলে সোলার করোনা। এই করোনা স্তর যেখানে শেষ হচ্ছে, সেখান থেকেই সৌরঝড়ের উৎপত্তি। এই করোনা উচ্চতাপমাত্রার প্লাজমার আস্তরণে ঢাকা। এখান থেকেই নির্গত হয় তড়িদাহত কণার স্রোত। প্রচণ্ড গতিতে তা ছড়িয়ে পড়ে মহাকাশে। একেই বলে সৌরঝড়।
Happy #SunDay! This week’s space weather report includes 14 notable solar flares, 31 coronal mass ejections, and no geomagnetic storms. This video from NASA’s Solar Dynamics Observatory shows the Sun over the past week and features sparkling solar activity throughout. pic.twitter.com/Pj1FtVKO89
— NASA Sun & Space (@NASASun) May 7, 2023
জানা গিয়েছে, গত এপ্রিল মাসের মধ্যেই ২৩ বার করোনাল মাস ইজেকশন হয়েছে। এর মধ্যে তিনবার প্রবল ঝড় উঠেছে সৌরবক্ষে। যার আঁচ লেগেছিল পৃথিবীর গায়েও। যদিও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, এপ্রিল মাসে এমননিতেই তেতেই থাকে সূর্য। এর আগেও এপ্রিল মাসে একাধিক সৌরঝড় উঠতে দেখা গিয়েছে। সূর্যের মধ্যে এখন ৯৬টি সানস্পট দেখতে পাওয়া গিয়েছে৷ এই অংশ সৌরঝড় অনেকটাই বেশি মাত্রায় হচ্ছে। আর তাতেই বাড়ছে আশঙ্কা। কারণ মহাকাশ বিজ্ঞানীরা দেখছেন, গত কয়েক বছর ধরে এই সানস্পটের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ সোলার ম্যাক্সিমাম-এর দিকে এগিয়ে চলেছে সৌরমণ্ডলের সর্ববৃহৎ নক্ষত্র।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্র ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে৷ যা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রে আঘাত হানতে পারে। সৌরঝড় পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়লে, এর শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র ও আয়নগুলি পৃথিবীর টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ও জিপিএস নেটওয়ার্ককে ধ্বংস করে দিতে পারে। সৌরঝড়ে স্যাটেলাইটগুলো আক্রান্ত হয় এবং টেলি যোগাযোগে বড়সড় ব্যাঘাত ঘটে।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>