এ বাজারে শুধুই মেলে ‘বর’! পয়সা দিয়ে বাড়ি নিয়ে যান কনেরা

এ বাজারে শুধুই মেলে ‘বর’! পয়সা দিয়ে বাড়ি নিয়ে যান কনেরা

4c15c992d3aa8bdb666f296467e2dbc0

কলকাতা: এ এক আজব বাজার৷ এখানে আলু-পটল-মুলো মেলে না৷ এ বাজারে বিক্রি হয় ‘বর’! হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন৷ এই বাজারে এসে দরদাম করে বর কিনে নিয়ে যান মেয়েরা৷ ভাবছেন তো এমন বাজার আবার হয় নাকি? হ্যাঁ, ঠিক এমনই বাজার রয়েছে বিহারের মধুবনি জেলায়৷ শুধু তাই নয়, গত ৭০০ বছর ধরে এই বাজার বসছে৷ গোটা জেলা থেকে মৈথিলী ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের পুরুষরা এসে এই বাজারে সম্ভাব্য বর হিসেবে ভিড় জমান। সেই বাজারেই মেয়েদের নিয়ে আসেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা৷ তার পর বর বাজার থেকে পছন্দের পাত্রকে বেছে নিয়ে যান তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দারা এই বিশেষ বাজারকে ‘বরের বাজার’ বা ‘সৌরথ সভা’ বলে থাকেন। 

আরও পড়ুন- পাকিস্তানে রয়েছেন মোদীর এক বোন, প্রতি বছর আসে রাখি-মিষ্টি, জানেন কে?

জেলার একটি বাগানে ৯ দিনের জন্য বসে এই সৌরথ সভা। এই বাজারে এসে কোনও তরুণী কোনও পুরুষকে পছন্দ করলে তাঁর পরিবারের সদস্যরা ওই পুরুষটির পরিবারের সঙ্গে সম্ভাব্য সম্পর্ক স্থাপন নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। বর বাছাই-এর পাত্রীর পরিবার পাত্রের শিক্ষাগত যোগ্যতা, আর্থিক সঙ্গতি, পারিবারিক পরিচয়, জন্মের শংসাপত্র, এবং অন্যান্য নথি যাচাই করে নেন। তবে সম্ভাব্য বর ও কনের মধ্যে গত সাত প্রজন্মের মধ্যে  রক্তের সম্পর্ক পাওয়া গেলে, সঙ্গে সঙ্গে বিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়। 

কথিত রয়েছে, এই অদ্ভুত সংস্কৃতির জন্মদাতা ছিলেন কর্নাট রাজবংশের রাজা হরি সিং। তাঁর মূল উদ্দেশ্য ছিল, বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করা এবং বৈবাহিক প্রথাকে যৌতুকমুক্ত করা। এই বাজারের প্রথা অনুসারে, সাধারণত লাল রঙের ধুতি পরে পিপুল গাছের নিচে দাঁড়িয়ে থকেন হবু বরেরা৷ তবে, বর্তমানে অনেকেই লাল ধুতি পরেন না৷ বদলে অনেকেই কুর্তা-পাজামা বা জিন্স-শার্ট পরেই বাজারে আসেন। 

যৌতুক প্রথা অবলুপ্ত করতে যে পরম্পরার সূচনা হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ সফল নয়৷ স্থানীয় সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুসারে, এই ধরনের বিয়েতে এখনও যৌতুকের প্রচলন রয়েছে। তবে ৭০০ বছরের পুরোনো প্রথা অনুসারে এই ধরনের বিয়েতে ম্যারেজ রেজিস্টার বা স্থানীয় ভাষায় ‘পঞ্জিকর’দের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। সাধারণত সৌরথ সভায় কনের বাবা-মা তাঁদের মেয়ের জন্য উপযুক্ত পাত্র খুঁজে পাওয়া মাত্রই, বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন৷ পঞ্জিকররাই সরকারিভাবে তাঁদেরর বিয়ে নথিভুক্ত করে থাকেন।