তিন কৃষি আইন কার্যকর করায় স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের, আলোচনায় কমিটি

তিন কৃষি আইন কার্যকর করায় স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের, আলোচনায় কমিটি

 নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি:  কেন্দ্রীয় সরকারের আনা তিন কৃষি আইন কার্যকর করার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট৷ একইসঙ্গে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা চাালিয়ে যাওয়ার জন্য চার সদস্যের কমিটিও গড়ে দিল শীর্ষ আদালত৷ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে বলেন, ‘‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিন কৃষি আইন কার্যকর করা স্থগিত থাকবে।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের আনা তিন কৃষি আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং কৃষক বিক্ষোভ হঠানোর নির্দেশের আর্জিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝা, ডিএমকে ত্রিচি শিবারা। সেই মামলারই এদিন শুনানি হয় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে।

এদিন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আমরা একটা কমিটি গঠন করছি, যাতে আমাদের কাছে সঠিক চিত্র পৌঁছায়। আমরা যুক্তি শুনতে চাই না যে, কৃষকরা কমিটি মানবেন না। আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। যদি আপনারা অনির্দিষ্টকালের জন্য বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে চান, আপনারা তা করতে পারেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা আইনের বৈধতা সম্পর্কে সচেতন এবং জীবন ও বিক্ষোভের ফলে যে সম্পত্তির ক্ষতি হয় সে সম্পর্কেও। আমাদের হাতে যে ক্ষমতা রয়েছে, তা মাধ্যমেই আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। তারমধ্যে একটা ক্ষমতা হল আইন স্থগিত করে কমিটি গঠন করা।’’ 

প্রধান বিচারপতির কথায়, ‘‘এই কমিটি আমাদের জন্য। যারাই সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আশাবাদী, কমিটির কাছে যান। কমিটি কোনও নির্দেশ দেবে না বা শাস্তি দেবে না, তারা শুধুমাত্র আমাদের রিপোর্ট দেবে৷ এই কমিটি বিচারপদ্ধতির একটি প্রক্রিয়া। আমরা আইনটি স্থগিত করার চেষ্টা করছি, তবে তা অনির্দিষ্টকালের জন্য নয়।’’ প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে দিল্লিতে ট্রাক্টর মিছিল করার ডাক দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি। তার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় দিল্লি পুলিশ। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে এদিন নোটিশ পাঠায় শীর্ষ আদালত। সেই আবেদনের সওয়াল জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল বলেন, যদি কৃষকদের ঢুকতে দেওয়া হয়, তাহলে তারা কোথায় যাবে, কেউ বলতে পারবে না। তার জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, “পুলিশ আপনাদের পক্ষে৷ শহরে ঢুকতে দেওয়া বা না দেওয়া পুলিশের সিদ্ধান্ত।’’ 

প্রধান বিচারপতি সাফ জানিয়ে দেন, বিষয়টি দেখা এবং তাঁদের হাতে অস্ত্র রয়েছে কিনা, তা দেখা পুলিশের দায়িত্ব। এরপরেই অ্যাটর্নি জেনারেলকে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘যদি কোনও নিষিদ্ধ সংগঠনের তরফে অনুপ্রবেশ হয়, তাহলে যদি কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করে, সেটা আপনাকে দেখতে হবে। আগামিকালের মধ্যে হলফনামা দিন।’’ আইবি রেকর্ড তুলে ধরে আগামিকালের মধ্যে হলফনামা দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রতি দেন অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল। এর আগেও দিল্লিতে রামলীলা ময়দানে বিক্ষোভ করতে চেয়েছিল কৃষক সংগঠনগুলি, যদিও তার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এদিন প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে জানান, “আমরা নির্দেশিকায় শুধু বলতে পারি, রামলীলা ময়দান বা অন্য কোনও জায়গায় বিক্ষোভের অনুমতি চেয়ে দিল্লি পুলিশে আবেদন করতে পারেন কৃষকরা।” এদিকে, মোট অষ্টম দফার বৈঠক হয়েছে কৃষক সংগঠন ও কেন্দ্রের। যদিও কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় কৃষকরা। অন্যদিকে কিছু সংশোধনী এনে আইন কার্যকর করতে চায় কেন্দ্র। আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দিল্লির চার সীমানায় বিক্ষোভরত কৃষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − six =