নয়াদিল্লি: ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতা হাত ছাড়া হওয়ার পর থেকে দেশের রাজনৈতিক মহলে কংগ্রেসের জনপ্রিয়তার গ্রাফটা ক্রমশ নিম্নমুখী। একদিকে দেশ জুড়ে নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহ পরিচালিত বিজেপির উত্থান, অন্যদিকে দলের মধ্যে নানা অসন্তোষ বিবাদের জের বিপর্যস্ত করেছে জাতীয় কংগ্রেসকে। কিন্তু তবু প্রধান বিরোধী শিবির হিসেবে মোদী সরকারের অপসারণে মরিয়া সোনিয়া গান্ধীর দল। এহেন পরিস্থিতিতেই এবার ফের নতুন সভাপতির নাম ঘোষণার কথা জানাল কংগ্রেস।
চলতি বছরের মে মাসেই কংগ্রেসের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হতে চলেছেন, এদিন এমনটাই ঘোষণা করলেন দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধী। শুক্রবার দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে তিনি জানান, রাজ্য গুলিতে বিধানসভা নির্বাচনের পালা মিটলে মে মাসে কংগ্রেসের দলীয় নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বেছে নেওয়া হবে পরবর্তী সভাপতি। অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে জাতীয় কংগ্রেসের এই বৈঠক আয়োজিত হয়েছিল বলে জানা গেছে সূত্রের খবরে।
বস্তুত কংগ্রেসের দলীয় সভাপতির পদ নিয়ে ২০১৯ সাল থেকেই জারি রয়েছে একাধিক বিতর্ক। লোকসভা নির্বাচনে দলের ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন সোনিয়া পুত্র রাহুল গান্ধী। তারপর থেকে সোনিয়া গান্ধীকেই দলের হাল ধরতে দেখা যায়। অবশ্য ২০১৯-এর পর থেকে দলীয় কর্মসূচীতে বিন্দুমাত্র গাফিলতি করেন নি রাহুল গান্ধী। এমতাবস্থায় আগামী দিনে তাঁকেই ফেরানো হতে পারে সভাপতির পদে, এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। তবে গান্ধী পরিবারের বাইরে থেকে কাউকে দলের নেতৃত্বের ভার দেওয়ার দাবিও কংগ্রেসের অন্দরে দীর্ঘ দিন ধরে দানা বেঁধেছে।
এদিনের ভার্চুয়াল বৈঠকে দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ফের একবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পরিচালিত সরকারকে তুলোধুনো করেছেন সোনিয়া গান্ধী। বর্তমান সরকার অসংবেদনশীলতা ও অহঙ্কারের সমস্ত সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এছাড়া কৃষি আইন নিয়ে কেন্দ্রের কৃষক বিরোধী অবস্থানের সমালোচনাও করা হয়েছে। তাড়াহুড়ো করে কৃষি আইন পাশ করিয়েছে সরকার, দাবি করেছেন কংগ্রেস নেত্রী। করোনা ভাইরাসের অতিমারীর পরিস্থিতিতে কেন্দ্র সরকারের একাধিক ভুল পদক্ষেপের বিরুদ্ধে নতুন করে এদিনের বৈঠকে সরব হয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। দলীয় নেতৃত্বের প্রতি তাঁর বার্তা বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির সময় সাংগঠনিক নির্বাচনের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।