সিমলা: প্রকৃতির রোষানলে একদিনেই কার্যত লন্ডভন্ড হিমাচল প্রদেশ। মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টি, ভূমিধস অন্যদিকে লাগাতার বৃষ্টিতে হড়পা বান সব মিলিয়ে রীতিমতো ভয়াবহ পরিস্থিতি উত্তরের এই পার্বত্য রাজ্যে। জানা যাচ্ছে একদিনের এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়েই এই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কমপক্ষে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ বাড়ি চাপা পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন, কেউবা আবার হড়পা বানে ভেসে গিয়েছেন।
অন্যদিকে এখনো পর্যন্ত পাঁচজন নিখোঁজ বলে রাজ্য মোকাবিলা দপ্তর সূত্রে খবর। হিমাচল প্রদেশের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের ডিরেক্টর সুদেশ কুমার মোখতা জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে গত ২৪ ঘন্টায় একই পরিবারের ৮ সদস্যসহ এখনও পর্যন্ত মোট ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। অতি ভারী বৃষ্টি এবং ভূমিধসের কারণে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হিমাচল প্রদেশের মান্ডি, কাংড়া এবং চাম্বা জেলা। গত একদিনে এই রাজ্যের কমপক্ষে ৩৬ টি জায়গায় ভূমিধস নেমেছে বলে খবর। শুধুমাত্র মান্ডিতেই হড়পা বান এবং ভূমিধসের কারণে এখনো পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ওই জেলাতেই হড়পা বানে নিখোঁজ হয়েছেন পাঁচজন। ভূমিধসে ভেঙ্গেছে একাধিক ঘর বাড়ি। মান্ডির কশান গ্রামে একটি বাড়িচাপা পড়ে একই পরিবারের ৮ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
প্রশাসনের তরফ থেকে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে, বিগত দু-তিন ধরেই এই রাজ্যে লাগাতার বর্ষণ শুরু হয়েছে। শনিবার সেটাই ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছায়। এদিন হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালার কাছে সকাল থেকে শুরু হয় মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টি। এর জেরেই চাম্বা, মান্ডিসহ একাধিক জেলা ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জানা যাচ্ছে মান্ডি এবং সিমলা চন্ডিগড় হাইওয়েতে কমপক্ষে ৭৪৩ টি রাস্তা ভূমিধসের কারণে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রবল বৃষ্টিতে ব্যাপকভাবে বিপর্যস্ত জনজীবন।
অন্যদিকে জানা যাচ্ছে হিমাচল প্রদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই তাণ্ডব আগামী ২৫ আগস্ট অবধি চলবে। ইতিমধ্যেই এই রাজ্যে ভারী বৃষ্টি এবং ধসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর। আগামী সপ্তাহেও ৩-৪ দিন কাংড়া, চাম্বা, মান্ডি, কুলু শিমলা, হামিরপুর, পুনা, বিলাসপুরের মত একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি হয়েছে। আগামী ২৪ আগস্ট পর্যন্ত গোটা হিমাচলপ্রদেশেই জারি থাকছে হলুদ সর্তকতা।