আইজল: বিনা অ্যাপয়েন্টমেন্টেই এক খ্যাতনামা চিকিৎসকের ডিসপেনসারিতে হাজির হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী কন্যা। আগে থেকে সে ব্যাপারে কোন তথ্যই ছিল না চিকিৎসকের কাছে। ফলে চিকিৎসক অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া রোগী দেখতে রাজি হননি। এদিকে নাছোড়বান্দা মুখ্যমন্ত্রী কন্যা। চিকিৎসককে না দেখিয়ে তিনি কিছুতেই ফিরবেন না। ফলে শুরু হয় তর্কাতর্কি। আর উত্তেজনা বাড়তেই চিকিৎসককে সপাটে চড় মেরে বসেন মন্ত্রীকন্যা। এই পুরো ঘটনার ভিডিওই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর তারপরই নড়েচড়ে বসেছে মিজোরাম সরকার। কারণ ঘটনাটি ঘটেছে মিজোরামের রাজধানী আইজলে। আইজলের একটি ক্লিনিকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কন্যা ওই চিকিৎসককে চড় মেরেছেন বলে খবর। সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই রাজ্য তো বটেই, সমগ্র দেশজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। শেষমেষ পরিস্থিতি সামলাতে মাঠে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। তিনি পুরো ঘটনার জন্য সকলের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বলে খবর।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার। জানা যাচ্ছে মিজোরামের আইজলের একটি ত্বকের ক্লিনিকে গতকাল চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গার মেয়ে মিলারি চ্যাংথে। সেইসময় প্রচুর রোগীর ভিড় ছিল সেখানে। কিন্তু সেই সমস্ত কিছু তোয়াক্কা না করেই অন্য রোগীদের পেরিয়ে সটান ডার্মাটোলজিস্টের কেবিনে ঢুকে পড়েন মন্ত্রীকন্যা। তাঁর কাছে বৈধ অ্যাপয়েন্টমেন্টও ছিল না বলে খবর। ফলে চিকিৎসকও মিলারিকে দেখবেন না বলে বেঁকে বসেন। এই ধৃষ্টতাই সহ্য হয়নি মন্ত্রী কন্যার। এরপরেই তিনি সরাসরি ওই চিকিৎসককে থাপ্পড় মেরে বসেন বলে খবর। পুরো ঘটনারই ভিডিও করেছিলেন সেই সময় ক্লিনিকে থাকা অন্যান্য রোগীরা। বুধবারেই সেই ঘটনাই সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তারপর থেকেই নেটিজনদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর পরিবারের বাকি সদস্যরা। নেটিজনদের একাংশের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর মেয়ে বলেই মাটিতে পা পড়ছে না ওই তরুণীর। তার জেরেই একজন চিকিৎসকের সঙ্গে তিনি এমন অভব্য আচরণ করেছেন তিনি।
অন্যদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল অর্থাৎ রবিবার ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মিজোরাম শাখার সদস্য চিকিৎসকরা কালো ব্যাচ পড়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁরা গতকাল সারাদিন কালো ব্যাচ পড়েই পরিষেবা দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
এরপরই পরিস্থিতি সামলাতে মাঠে নেমেছেন ‘মুখ্যমন্ত্রী’ বাবা। জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের কাছে একটি ক্ষমা চিঠি জমা দিয়েছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডালেও ওই চিঠির ছবি পোস্ট করা হয়েছে। যেখানে মেয়ের ব্যবহারের জন্য তিনি জনসাধারণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, মেয়ের আচরণকে তিনি কোনোভাবেই সমর্থন করছেন না।