কলকাতা: শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায় আর মিহির গোস্বামী৷ বলুন তো, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখানো ছাড়া এঁদের মধ্যে আর কী মিল রয়েছে? মাথা চুলকোনোর দরকার নেই৷ উত্তরটা সহজ৷ জোড়াফুল ছেড়ে পদ্মফুলে নাম লেখানোর হিড়িকের পর গণহারে প্রার্থীপদ পাওয়া দলবদলুদের মধ্যে এই তিন জনের ভাগ্যেই শিকে ছিঁড়েছে বিধানসভার৷ বাকি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সব্যসাচী দত্ত- সবার কপালেই লেখা হয়েছে লজ্জার হার৷ কিন্তু কেন এমন হল? তা হলে এঁদের কি নিজস্ব গণভিত্তি নেই? শুধুই আলোকিত ছিলেন মমতার আলোয়?
আসলে ভোটে বিপর্যস্ত হওয়ার পর যে শিক্ষা নেওয়ার কথা বলছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সেটাই সম্ভবত কারণ হিসেবে সত্যি৷ বাছবিচার না-করে একদিকে যেমন তৃণমূল ভাঙিয়ে দল ভারী করেছে তারা, তেমনই নিজেদের দলের লোকের বদলে প্রার্থী হিসেবে অগ্রাধিকার দিয়েছে দলবদলুদের৷ অন্য রাজ্যে এই ফর্মুলা কাজে দিলেও, বাংলার মাটি যে অন্য ঘাঁটি, তা বোধ হয় ফল বেরনোর পর টের পেলেন গেরুয়া নেতারা৷ ফলাফলেই স্পষ্ট, গণহারে দলবদলের রাজনীতিকে গ্রহণ করেনি বঙ্গজনতা৷ তার নিট ফল, দলবদলুরা তো প্রত্যাখ্যাত হয়েইছে, সোনার বাংলা গড়ার অভিযানও মুখ থুবড়ে পড়েছে৷
বিজেপির হারের আর একটা বড় কারণ সম্ভবত বিকল্প মুখের অভাব৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কে, এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর খুঁজে পায়নি পদ্মশিবির৷ লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদিকে সামনে রেখে লড়াই সাফল্য দিলেও বঙ্গ দখলের যুদ্ধে তা উড়ে গিয়েছে খড়কুটোর মতো৷ মমতা যেখানে বারবার বলেছেন এটা দিল্লির ভোট নয়, তিনি থাকবেন কি না, সেটার পরীক্ষা, সেখানে বিজেপি হাজির করতেই পারেনি তাঁকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কোনও মুখ৷ ফলে আইডেন্টিটি পলিটিক্সের ফায়দা পুরোপুরি কুড়িয়ে বাংলা আবার মমতাময়৷