কলকাতা: বাস্তবে কেন, কেউ স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি যেটা, সেটাই হয়েছে শনিবার দুপুরে। বাবুল সুপ্রিয় যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসে, তাও আবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। আগেই বিধানসভা ভোটে লজ্জাজনকভাবে হেরেছিলেন তিনি। পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব হারান এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে ‘রাজনৈতিক সন্ন্যাস’ নিয়ে নেন। একাধিকবার তৃণমূল যোগের প্রসঙ্গ উঠলেও বাবুল সোজা ব্যাটে খেলে সেইসব কৌতূহলের বলকে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়েছিলেন। তবে শনিবার সব বদলে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চোর’ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা বাবুল, টালিগঞ্জের ‘বিশ্বাস ব্রাদার্স’কে হারানোর পন নেওয়া বাবুল, আজ তাঁদের সঙ্গেই পায়ে পা মেলাবেন।
আরও পড়ুন- জ্বর-শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশুরা, সমস্যা মোকাবিলায় গাইডলাইন প্রকাশ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের
দলবদলের পর আজ নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রথমবার সাক্ষাৎ করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয়। অভ্যর্থনা জানিয়ে এদিন বাবুলকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো৷ তাঁদের কথা হয়েছে গান নিয়েও৷ সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে তাঁকে দলে স্বাগত জানিয়েছেন তাতে তিনি অত্যন্ত খুশি এবং আপ্লুত। এবার নাকি মন খুলে কাজ এবং গান গাইতে পারবেন তিনি। বাবুল আরও জানিয়েছেন, ”অন্য কোথাও থেকে আসার পর এতটা ভালোবাসা পেলে সত্যিই ভালো লাগে৷ অভিষেক ও দিদির উষ্ণ অভ্যর্থনায় আমি আপ্লুত৷ আমার উপর তাঁরা ভরসা দেখিয়েছেন৷ তাঁর মর্যাদা রাখব৷ আগামী দিনে আশা করি ভালো কাজ করব৷” দলবদল অনেক হয়েছে। তৃণমূল থেকে বিজেপি, বিজেপি থেকে তৃণমূল। মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীর মত বড় নাম এই দলবদলের এক একজন কাণ্ডারি বলা যেতে পারে। তবে বাবুলের দলবদল যেন ঠিক হজম করা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন- বাবুল তৃণমূলে! শুনতে অবাক লাগলেও এটাই এখন সত্যি
তৃণমূলে যোগ দিয়ে বাবুল প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন যে, যা হওয়ার ৪-৫ দিনের মধ্যেই ঘটে গিয়েছে। এখানেই প্রশ্ন, যে এমন কী হল যেটা ৪-৫ বছরে হল না, অথচ ৪-৫ দিনে হয়ে গেল? বাবুল রাজনৈতিক জীবনই শুরু করেছিলেন বিজেপি থেকে। তিনি রাজনীতির লোক ছিলেন না, তাই ‘রাজনীতি করতে’ রাজনীতিতে আসেননি হয়ত। কিন্তু এখন তিনি পরিপক্ক হয়েছেন। তাই মনে হয়, সাংসদ হওয়ার পরেও দলের নির্দেশে বিধানসভা নির্বাচনে বিধায়ক পদে লড়তে গিয়ে হারা এবং একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব হারানোর ব্যাপারটা সহ্য না করতে পেরেই ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ হয়েছিলেন। এবার খোলা বাতাস আর ঘাসফুলের মিষ্টি সুবাসে হয়ত আবার খেলতে ইচ্ছা করেছে তাঁর। তবে এই জার্সি বদল সাধারণ মানুষ কীভাবে নেবেন তাই দেখার, কারণ ‘বিজেপির’ বাবুলের বক্তব্য, মমতা বিরোধী মন্তব্য, মোদী ভক্তি বাংলা কিন্ত ভুলে যায়নি। খেলা তখন হয়েছে, পরেও হবে অবশ্যই।