দিল্লি থেকে আসছে না টাকা, ‘কাঞ্চন’ অভাবে ভুগছে বঙ্গ-বিজেপি! বাংলা নিয়ে কি আশাহত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব?

দিল্লি থেকে আসছে না টাকা, ‘কাঞ্চন’ অভাবে ভুগছে বঙ্গ-বিজেপি! বাংলা নিয়ে কি আশাহত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব?

নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ থেকে দু’শোর বেশি আসনে জিতে বিজেপি ক্ষমতায় আসবে, এমন দাবি বারবার করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, দলের সভাপতি জেপি নাড্ডা। এমনকী সেই সময় বাংলায় প্রচার করতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একই দাবি করেছিলেন। কিন্তু ফল কি হয়েছে সবাই জানে। এরপর থেকেই দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে কার্যত উদাসীন মনোভাব নিয়ে চলছেন। যাতে অস্বস্তি বাড়ছে বঙ্গ বিজেপির। সবচাইতে বড় কথা রাজ্য বিজেপি ভুগছে অর্থের অভাবে।

এতে তাদের কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। অথচ ভারতবর্ষের মধ্যে বিজেপি সবচাইতে ধনী পার্টি। তাদের সম্পদ দিন দিন ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। এই অবস্থায় আর্থিক সংকটে ভুগছে রাজ্য বিজেপি, যা মেনে নিতে পারছেন না সুকান্ত মজুমদাররা। এতে তাঁদের অসুবিধা হচ্ছে দল চালাতে। এবার দিল্লিতে গিয়ে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি জেপি নাড্ডাকে সে কথাই জানালেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। নাড্ডার সঙ্গে দেখা করে আর্থিক সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার, অমিতাভ চক্রবর্তী, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, অমিত মালব্যরা। তবে ডেকে পাঠানো হলেও কোনও অজ্ঞাত কারণে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বৈঠকে উপস্থিত হননি। দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গের সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে সবিস্তারে জানতে চান বিজেপি সভাপতি। রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক পরিস্থিতি যে ভাল নয় সেই তথ্য কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বকে আগেই জানিয়েছে বাংলার সংঘ পরিবার। এরপরই কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা বাংলার নেতাদের ডেকে পাঠিয়ে সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে সবিস্তার আলোচনা করবেন। সেই সূত্রেই ডেকে পাঠানো হয়েছিল সুকান্তদের। সেই সূত্রে সাংগঠনিক অবস্থার কথা জানানোর পাশাপাশি রাজ্য বিজেপির ভাঁড়ে মা ভবানী পরিস্থিতির কথা নাড্ডাকে জানিয়েছেন সুকান্তরা। যদিও রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি সুকান্ত মজুমদার।

কিছুদিন আগেই পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে রাজ্য বিজেপি নেতাদের সঙ্গে একমত হননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি কার্যত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করেছে। সেই সঙ্গে বলেছেন সিপিএম তথা বামেদের বিরুদ্ধে মমতা যেভাবে আপসহীন লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন তিন দশকের বেশি সময় ধরে সেভাবে রাজ্য বিজেপিকেও লড়াই করতে হবে। মাঠে ময়দানে না থাকলে সাফল্য আসবে না, সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন শাহ। একই কথা শোনা গিয়েছে নাড্ডার মুখেও। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য বিজেপি নেতারা তাঁদের কোষাগারের করুণ অবস্থার কথা জানাচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। অথচ একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সকলে দেখেছেন কীভাবে প্রচারে কোটি কোটি টাকা খরচ করেছিল গেরুয়া শিবির। তবে এখন সেসব অতীত। সেই সময় বিজেপি মনে করেছিল পশ্চিমবঙ্গে তারা ক্ষমতায় আসতে চলেছে। কিন্তু ডাবল সেঞ্চুরি তো দূরের কথা, সেঞ্চুরির বহু আগেই তাদের থেমে যেতে হয়েছে। পরবর্তীকালে বঙ্গ বিজেপিতে ভাঙন শুরু হয়। সংগঠন কার্যত ভেঙে পড়েছে। তা মেরামতি করতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কতটা সাহায্য করেন এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × one =