নিজস্ব প্রতিনিধি: সামনেই উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন। সেখানে বিজেপি প্রার্থী কে হবেন তা নিয়ে বহুদিন ধরেই জল্পনা চলছে। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিলেন মুক্তার আব্বাস নাকভি।
বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের দুই মন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং মুক্তার আব্বাস নাকভি অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকারেরও মন্ত্রী ছিলেন। তাঁরা ছাড়া বর্তমান মন্ত্রিসভার আর কেউ তৎকালীন বাজপেয়ী সরকারে ছিলেন না। সেই মুক্তার আব্বাস নাকভি বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তবে কি নাকভিকে এবার উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে দেখা যাবে? স্বাভাবিকভাবেই সেই জল্পনা তাঁকে নিয়ে শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে। সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের মন্ত্রী নাকভি এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দেন। সেই সঙ্গে নাকভি দেখা করেন বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গেও। উল্লেখ্য বৃহস্পতিবারই তাঁর রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এবার তাঁকে আর রাজ্যসভায় মনোনয়ন দেয়নি বিজেপি। তাই উপরাষ্ট্রপতি পদে বিজেপি তথা এনডিএ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তাঁকেই দেখা যাবে বলে চর্চা তুঙ্গে।
উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডুর মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১০ আগস্ট। এরপর দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে কে বসবেন তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। বহুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে বিজেপি একজন সংখ্যালঘুকে উপরাষ্ট্রপতি করতে পারে। আসলে নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বিপাকে পড়েছে গেরুয়া শিবির। তাই দেশবাসীকে বিশেষ বার্তা দিতে বিজেপি নাকভির মতো সংখ্যালঘু মুখকে উপরাষ্ট্রপতি পদে তুলে ধরতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। উপরাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৯ জুলাই। আগামী ৬ আগস্ট উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন। এদিকে নাকভির পাশাপাশি কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নাজমা হেপতুল্লা এবং পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংহ-ও উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে আছেন বলে জানা যাচ্ছে। তবে সূত্রের খবর নাকভির পাল্লাই আপাতত ভারী। আর উপরাষ্ট্রপতি পদে বিজেপি কাকে প্রার্থী করে সেটা দেখেই বিরোধীরা প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করবে বলে জানা যাচ্ছে।
বিজেপি সংখ্যালঘু বিরোধী, বহুদিন ধরেই বিরোধীরা এই অভিযোগে সরব। আর এই ধারণা কাটিয়ে উঠতে বর্তমানে উঠেপড়ে লেগেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সম্প্রতি তিনি বলেছেন সমস্ত সম্প্রদায়ের কাছে বিজেপিকে যেতে হবে। উন্নয়নের মাধ্যমে সকলের পাশে দাঁড়াতে হবে। গেরুয়া শিবির মনে করছে নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে যে অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে তাদের তাতে উপরাষ্ট্রপতি পদে নাকভি বা কোনও সংখ্যালঘু মুখকে নিয়ে আসলে অনেকটাই সেই অস্বস্তি কাটিয়ে ওঠা যাবে। ঠিক সেই জায়গা থেকে উপরাষ্ট্রপতি পদে নাকভির নাম নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। রীতিমতো চিত্রনাট্য মেনেই যে বিজেপি এ কাজে এগোতে চলেছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।