কেন পার্থ তৃণমূলের পাশে থাকার কথা বলছেন? রাজনীতিতে ভেসে থাকার জন্যই পার্থর এই মরিয়া চেষ্টা!

কেন পার্থ তৃণমূলের পাশে থাকার কথা বলছেন? রাজনীতিতে ভেসে থাকার জন্যই পার্থর এই মরিয়া চেষ্টা!

নিজস্ব প্রতিনিধি:  ইডি’র হাতে গ্রেফতার হওয়ার কিছু দিন পর প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কথা বলেছিলেন। সম্প্রতি আবার বলেছেন কেউ ছাড়া পাবে না। তবে শনিবার পার্থ স্পষ্ট জানালেন তিনি দলের সঙ্গেই থাকবেন। এদিন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে হঠাৎই অসুস্থ বোধ করেন প্রাক্তন মন্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে পার্থকে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চিকিৎসকদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পার্থকে ফিরিয়ে আনা হয় প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে।

সেখানে ঢোকার মুখে সাংবাদিকরা পার্থবাবুর কাছে দল সম্পর্কে তাঁর অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন,”আমি আগেও বলেছি, আমি দলের সঙ্গে আছি। দলের সঙ্গেই থাকব”। উল্লেখ্য গ্রেফতার হওয়ার পর মন্ত্রিত্ব খোওয়ানোর পাশাপাশি দল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে পার্থকে। নির্দোষ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত পার্থ দলে ফিরতে পারবেন না। সবচেয়ে বড় কথা দলের একাংশ পার্থকে কার্যত দোষী ঠাওরে ফেলেছেন। বিষয়টি নিয়ে অনেককে প্রকাশ্যে বিবৃতি পর্যন্ত দিতে দেখা গিয়েছে। অনুব্রত মণ্ডলের পাশে তৃণমূল দাঁড়ালেও পার্থর পাশে দল নেই। এই আবহের মধ্যে পার্থ কিন্তু দলের সঙ্গেই থাকার বার্তা দিলেন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে তৃণমূল তাঁকে ঝেড়ে ফেললেও পার্থ কিন্তু দলের প্রতি আস্থা হারাননি। এর আগে গ্রেফতার হওয়ার পর হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করাতে যাওয়ার সময় পার্থকে বলতে শোনা যায় তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে কারা ষড়যন্ত্র করেছেন তা স্পষ্ট করেননি তিনি। গত বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে পার্থ ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে বলেন, “কেউ ছাড়া পাবে না, সময়ে সব প্রমাণ হবে৷”

স্বাভাবিকভাবেই পার্থর সেই মন্তব্য নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে বিস্তর চর্চা হয়। কাদের লক্ষ্য করে তিনি ছাড়া পাবে না বলেছেন, তা নিয়ে নানা মত উঠে আসে। অনেকেই মনে করেন পার্থ দলের একাংশকেই নিশানা করে এমন কথা বলেছেন। কারণ গ্রেফতার হওয়ার পর একবারের জন্যও পার্থকে বিজেপি বা কেন্দ্রের বিরোধিতা করে কিছু বলতে শোনা যায়নি। কিন্তু এখন পার্থ তাঁর অবস্থান বদল করছেন পরিস্থিতির চাপে, এমনটাই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। আসলে পার্থ বুঝে গিয়েছেন দল তাঁকে যেভাবে ঝেড়ে ফেলেছে তাতে রাজনীতিতে তাঁর কেরিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছে। নতুন করে তিনি রাজনৈতিক ময়দানে ফিরে আসবেন, সেই সম্ভাবনা কার্যত নেই বললেই চলে। টানা ইডি হেফাজতে থাকার পর বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন পার্থ। 

পার্থর আইনজীবীরা মনে করছেন আদালতে পরবর্তী হাজিরার দিনে তাঁর শারীরিক অবস্থার কারণ নতুন করে তুলে ধরে জামিন চাইলে সেটা মঞ্জুর হতেও পারে। আর তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেওয়া যায় পার্থ জামিন পাচ্ছেন, তাতেও তাঁর বিশেষ সুবিধা হবে না। সেক্ষেত্রে ঘরবন্দি হয়েই তাঁকে থাকতে হবে। কারণ তৃণমূলের ধারে কাছে তাঁকে ঘেঁষতে দেবে না দল। তাই পার্থ মনে করছেন এখন যদি দলের প্রতি বাড়তি আনুগত্য দেখানো যায় তাহলে তাঁর রাজনীতিতে ফিরে আসার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। সেই কারণেই নতুন করে ষড়যন্ত্র বা কেউ ছাড় পাবে না এই জাতীয় মন্তব্য করে বিতর্ক আর বাড়াতে চাইছেন না রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। তাই দলের প্রতি পার্থর ক্ষোভ-বিদ্বেষ যদি থেকেও থাকে তাহলেও তিনি ওই রাস্তায় আর হাঁটতে চান না নিজের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই। তাই পার্থ এখন দলের পাশে থাকার কথা বলবেন, এতে আর নতুনত্ব কি আছে?
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *