বিরোধী জোটের মুখ হিসেবে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছেন মমতা? জল্পনা শুরু একাধিক নাম নিয়ে

বিরোধী জোটের মুখ হিসেবে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছেন মমতা? জল্পনা শুরু একাধিক নাম নিয়ে

6c95abf20301c0babb6f49054577e8e5

 

নিজস্ব প্রতিনিধি: চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে হটাতে গেলে চাই মসৃণ বিরোধী জোট। এ কথা বহুবার বলেছেন বিরোধী নেতা-নেত্রীরা। কিন্তু দেখা গিয়েছে বাস্তবে সেই জোট গড়ে ওঠেনি। জোট গড়ে তোলার ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরেই অগ্রণী ভূমিকায় দেখা যাচ্ছিল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর পশ্চিমবঙ্গে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে দুরমুশ করার পর তৃণমূল নেতৃত্ব প্রচার  শুরু করে নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে বিরোধী জোটের মুখ হিসেবে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা প্রধানমন্ত্রী হবেন এই স্বপ্ন দেখা তখন থেকেই শুরু করে দেন তৃণমূলের লক্ষ লক্ষ কর্মী সমর্থকরা। কিন্তু সাম্প্রতিককালে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল বিরোধী জোটের কথা না বলে রাজ্যভিত্তিক আঞ্চলিক দলগুলিকে আরও শক্তিশালী হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা বলছে।

তৃণমূলের বক্তব্য প্রত্যেকটি রাজ্যে আঞ্চলিক দলগুলি যদি বিজেপিকে হারিয়ে দেয়, তাহলে আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না গেরুয়া শিবির। স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূলের এই নতুন ফর্মুলা নিয়ে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে চর্চা শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির অন্যতম নেতা মণীশ সিসোদিয়া স্পষ্ট বলেছেন আগামী লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে প্রধান বিরোধী মুখ হবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। শুধু তাই নয়, আরজেডি নেতা তথা বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী জোটের মুখ হিসেবে নীতিশ কুমারের নাম ভাসিয়ে দিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তা সমর্থন করতে পারছে না কংগ্রেস। কারণ কংগ্রেসের একাধিক নেতা বারবার বলেছেন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে রাহুল গান্ধী ছাড়া তাঁরা আর কারও কথা ভাবছেন না। এই পরিস্থিতিতে মমতার নাম সেভাবে এখন আলোচিত হচ্ছে না কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে।

বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিজেপি কটাক্ষ করা শুরু করে দিয়েছে তৃণমূলকে। বিজেপির বক্তব্য, মমতা ছাড়া অন্যান্য নামগুলিকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বিরোধী জোটের মুখ হিসেবে। আসলে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থীকে সমর্থন না করে তৃণমূল ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যে ঘটনায় তৃণমূল সম্পর্কে ধারণা বদলাতে থাকে বিজেপি বিরোধী দলগুলির। এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্তে প্রচুর গতি বাড়িয়েছে। আর ঠিক তখনই তৃণমূল জানাচ্ছে সার্বিক বিরোধী জোটের বদলে আঞ্চলিক দলগুলি আরও শক্তিশালী হলেই দিল্লির মসনদ থেকে বিজেপিকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া যাবে। এই অবস্থায় গোটা বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল কি ভাবছে তা জানতে চাইছে দেশের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। সেই সঙ্গে বাম-কংগ্রেসের কটাক্ষ, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাত থেকে বাঁচতেই তৃণমূল এখন বিজেপির বিরুদ্ধে বড় কোনও কর্মসূচি নিতে চাইছে না। এক্ষেত্রে ফের তারা সেটিং-এর অভিযোগ করছেন। যথারীতি তৃণমূল সেই অভিযোগ অস্বীকার করছে। কিন্তু এটা স্পষ্ট কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে মমতাকে কয়েক মাস আগেও যেভাবে বিরোধী জোটকে একত্রিত করার ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকায় দেখা যেত, সেটা এখন উধাও হয়ে গিয়েছে। তাই আগামী দিনে দিল্লি রাজনীতিতে তৃণমূলকে কি ভূমিকায় দেখা যাবে এখন তারই অপেক্ষা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *