চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারী, মিলবে সুরাহা? কতটা ডিভিডেন্ড পাবে বিজেপি?

চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারী, মিলবে সুরাহা? কতটা ডিভিডেন্ড পাবে বিজেপি?

fb20c10612f7e7baaef7d350a10a7a86

নিজস্ব প্রতিনিধি: শিক্ষক নিয়োগে এমন দুর্নীতি হয়েছে যা জানতে পারলে প্রত্যেকে শিউরে উঠবেন। বুধবারই কলকাতা হাইকোর্টে বিষয়টি নিয়ে সবিস্তার রিপোর্ট পেশ করতে গিয়ে এমন দাবি করেছে সিবিআই। যা শুনে রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আর এদিনই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ধর্মতলায় চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে উপস্থিত থেকে রাজ্যকে ফের নজিরবিহীন আক্রমণ করেছেন। একদিকে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনকে তিনি কুর্নিশ জানিয়েছেন, অন্যদিকে তাঁদের শরীরের যত্ন নিতে বলেছেন।

আসলে শুভেন্দু ভাল করেই জানেন যেভাবে দেড়  বছরের বেশি সময় ধরে চাকরিপ্রার্থীরা ধর্মতলার মঞ্চে অনশন আন্দোলন করছেন তাতে তাঁদের প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতি রয়েছে রাজ্যবাসীর। আসলে কলকাতা হাইকোর্টের একের পর এক নির্দেশের পরই চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন গত কয়েক মাসে অন্য মাত্রা পায়। চাকরি নিয়ে যে সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে তা বুঝে যান সকলে। সিবিআই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করতেই বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে উঠে আসে। যেভাবে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময় চাকরি বিক্রি করা হয়েছে তা সামনে চলে আসে। এই পরিস্থিতিতে নবান্ন অভিযানের পর চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি নিজেদের পালে যে আরও হাওয়া লাগাতে চায় তা স্পষ্ট। ধর্মতলার মঞ্চে গিয়ে তাই শুভেন্দুকে বলতে শোনা গিয়েছে,”আপনাদের নিয়োগ একদিন হবেই। এতদিন চাকরি না পাওয়ার জন্য বকেয়া বেতনও পাবেন আপনারা। তবে অনশন করবেন না। শরীরের দিকে যত্ন নিন।” সেই সঙ্গে শুভেন্দু বলেছেন পুজোর সময়েও তিনি চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে পাশে থাকার চেষ্টা করবেন। আর সীমিত শক্তি নিয়ে বিধানসভার অভ্যন্তরে বিজেপি বিরোধী দল হিসেবে চাকরিপ্রার্থীদের অভাব অভিযোগের কথা নিয়মিত তুলে ধরছে বলেও আন্দোলনকারীদের জানিয়েছেন শুভেন্দু।

আর আন্দোলনকারীদের মঞ্চ থেকেই বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, রাজ্য সরকার একের পর এক কমিশন গঠন করে তার মাথায় বসাচ্ছে দলীয় নেতাদের। তাই মেধাকে বিসর্জন দিয়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে তৃণমূলের প্রতি আনুগত্য প্রাধান্য পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে শুভেন্দু দাবি করেছেন, স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষাও ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা ইউপিএসসি’র আদলে হওয়া উচিত। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে এতদিন চাকরিপ্রার্থীদের  আন্দোলনকে সরকার বা রাজ্যবাসী সেভাবে গুরুত্ব দেয়নি।  বিষয়টিকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবেই কার্যত দেখা হয়েছে। কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার এবং তাঁর বান্ধবী অভিনেত্রী মডেল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে যেভাবে টাকার পাহাড় উদ্ধার হয়েছে, তখনই চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন রাতারাতি অন্য মাত্রা পেয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না গেরুয়া শিবির। লোহা যখন লাল তখনই তাকে আঘাত করতে হয়, এ কথা চিরকালীন সত্য। আর সেটাই সুকৌশলে করছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দুর্গাপুজোর সময়েও শুভেন্দু  আন্দোলনকারীদের মঞ্চে গেলে তা নতুন করে খবরের শিরোনামে আসবে। শুভেন্দুর এই প্রচেষ্টা বা কৌশল বিজেপিকে রাজ্য রাজনীতিতে কতটা ডিভিডেন্ড দেয় সেটাই এখন দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *