নিজস্ব প্রতিনিধি: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির আতস কাচের নীচে রয়েছেন মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তাপস মণ্ডল। এবার তাঁকে ফের তলব করা হল। জানা গিয়েছে মূলত ইডির নজরে রয়েছে তাপসের অনলাইন ক্লাস। সেই অনলাইন ক্লাস নিয়েই রবিবার তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন ইডি আধিকারিকরা। কি কারণে ইডির নজরে রয়েছে অনলাইন ক্লাস? ইডির দাবি কোভিড কালে অনলাইন ক্লাস নিয়ে প্রচুর টাকা নয়ছয় করা হয়েছিল। অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভারস অ্যাসোসিয়েশনের (এবিটিটিএএ) প্রেসিডেন্ট হিসেবে রয়েছেন তাপস মণ্ডল। এই সংস্থার অধীনে বহু কলেজ রয়েছে যেখানে ডিএলএড-এর কোর্স করানো হয়। করোনা পরিস্থিতিতে এবিটিএএ-র পক্ষ থেকে ডিএলএড-এর চল্লিশ হাজার পড়ুয়ার কাছ থেকে মাথাপিছু ৫০০ টাকা করে নিয়ে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়। টালিগঞ্জের একটি সংস্থা সেটির দায়িত্ব পায়। প্রায় দু কোটি টাকার চুক্তি করা হয়েছিল। এই টাকা তুলে কোথায় পাঠানো হয়েছিল, কাকে পাঠানো হয়েছিল এই সমস্ত তথ্য রবিবার তাপসের কাছ থেকে ইডি আধিকারিকরা জানতে চেয়েছেন বলে খবর।
এদিন সকালে অনলাইন ক্লাস সংক্রান্ত নথিপত্র নিয়ে ইডি দফতরে হাজির হয়েছিলেন তাপস। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ইডি দফতরে হাজির হয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। যদিও তার আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ই-মেল করে তাপস জানিয়েছিলেন অসুস্থতার কারণে তিনি যেতে পারবেন না। এই কারণ দেখিয়ে সেদিন অতিরিক্ত সময় চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁকে অতিরিক্ত সময় দেননি ইডি আধিকারিকরা। এই পরিস্থিতিতে রবিবার ফের তাঁকে হাজিরা দিতে হল ইডি দফতরে।
৪০ হাজার পড়ুয়ার প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা, অর্থাৎ দু’কোটি টাকা তখন তোলা হয়েছিল। এই বিপুল পরিমাণ টাকার ব্যবহার কীভাবে করা হয়েছে, তা জানতে চান কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। ইডি মনে করছে ওই টাকার একটা বড় অংশ তছরুপ করা হয়েছে। এর আগে তাপস মণ্ডলের বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টারের হদিস পেয়েছে ইডি। সেখানে চাকরির জন্য পড়তে আসা পড়ুয়াদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছে বলে ইডি মনে করছে। তদন্তকারীদের অনুমান সেই লক্ষ লক্ষ টাকার একটা বড় অংশ পৌঁছে যেত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের মাথাদের কাছে। আর সেই টাকা নিয়ে আসার অন্যতম সোর্স হচ্ছেন এই তাপস। এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা। আর সেই সূত্রে তদন্ত করতে গিয়েই উঠে এসেছে এই অনলাইন ক্লাসের বিষয়টি। এই পরিস্থিতিতে তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু তথ্য ইডি হাতে পেয়েছে বলে খবর। সেই জায়গা থেকে তদন্ত প্রক্রিয়া কোন দিকে যায় এখন সেটাই দেখার।