লোকসভার আগেই রামমন্দিরের উদ্বোধন, ধর্মীয় আবেগ হাতিয়ার করেই ভোট বৈতরণী পার হতে মরিয়া বিজেপি?

লোকসভার আগেই রামমন্দিরের উদ্বোধন, ধর্মীয় আবেগ হাতিয়ার করেই ভোট বৈতরণী পার হতে মরিয়া বিজেপি?

নিজস্ব প্রতিনিধি:  ফের খবরের শিরোনামে অযোধ্যার রামমন্দির। আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগেই খুলে যাচ্ছে রামমন্দির। রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট মঙ্গলবার এ খবর জানিয়েছে। ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সম্পত রাই জানিয়েছেন ইতিমধ্যেই মন্দিরের পঞ্চাশ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন চব্বিশের জানুয়ারি মাসেই মন্দির নির্মাণের পাশাপাশি মূর্তি স্থাপনের প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। তাই এটা স্পষ্ট আগামী লোকসভা নির্বাচনে রামমন্দির ইস্যু প্রচারে কাজে লাগাবে বিজেপি।

রাম মন্দির নিয়ে যে এমন ঘোষণা হবে তার ইঙ্গিত রবিবারই পাওয়া গিয়েছিল। দীপাবলীর আগে থেকেই আলোকমালায় সেজে উঠেছিল অযোধ্যা নগরী। ১৫ লক্ষ প্রদীপের আলোয় নতুন করে সেজে ওঠা অযোধ্যা অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায়। এই অবস্থায় রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অযোধ্যায় রামমন্দিরে রামলালা দর্শনের পাশাপাশি সেখানে পুজো দিয়েছেন। এছাড়া  প্রধানমন্ত্রী সরযূ নদীর তীরে আরতি দেখেন। এরপরই দীপোৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বিস্তীর্ণ অঞ্চল ১৫ লক্ষ প্রদীপ দিয়ে সাজানো হয়েছিল। প্রদীপ জ্বালিয়ে সাজানোর জন্য ২২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছিল অযোধ্যা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সেই অনুষ্ঠান ঘিরে অসংখ্য মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন সেখানে। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি বহু বিশিষ্ট মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন অযোধ্যায়।

এই বিশাল কর্মযজ্ঞে সামিল হতে দেখা যায় বহু বিদেশি পর্যটককেও। উল্লেখ্য দীপাবলীকে সামনে রেখে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। অযোধ্যার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ফুলের তৈরি রঙ্গোলি দিয়ে সাজানো হয়। মথুরা, সীতাপুর এবং অন্যান্য শহরের বিশেষ শিল্পীদের এনে রামমন্দির, রামলালা এবং রামায়ণ গেটগুলির সাজসজ্জার কাজ করা হয়। সব মিলিয়ে এক নতুন অযোধ্যা দেখলেন হাজার হাজার মানুষ। আর প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দীপোৎসব সম্পূর্ণ অন্য মাত্রা পায়। ঠিক তারপরেই শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের চেয়ারম্যান জানিয়ে দিলেন মন্দির নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই রামমন্দির নির্মাণের কাজ কার্যত শেষ হয়ে যাবে। এরপর রামলালা মূর্তি সেখানে স্থায়ীভাবে স্থাপন করার পরেই রামমন্দির সমস্ত দর্শনার্থীর জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ট্রাস্ট।

নির্ধারিত সময়ে লোকসভা নির্বাচন হলে সেটি চব্বিশের মার্চ-এপ্রিল নাগাদ হওয়ার কথা। তাই তার আগে রামমন্দিরের দরজা সকলের জন্য খুলে গেলে সেটি যে বিজেপি ভোট প্রচারে কাজে লাগাবে, তা সকলেরই জানা। সেক্ষেত্রে রামমন্দির আবেগ বিজেপির নির্বাচনী প্রচারে অন্যতম বড় হাতিয়ার হয়ে  উঠবে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে সবকিছুই রীতিমতো চিত্রনাট্য মেনে এগিয়ে চলেছে। আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নামছে পর পর তিনবার জয় অর্থাৎ হ্যাটট্রিকের লক্ষ্যে। সেক্ষেত্রে রামমন্দির নির্মাণ ইস্যু তাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে। আর রামমন্দির আবেগকে গেরুয়া শিবির নির্বাচনী প্রচারে যে সুকৌশলে ব্যবহার করবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two + 5 =