ডিসেম্বরে আদৌ কিছু ঘটবে? নাকি শুধু তৃণমূলকে চাপে রাখার কৌশল? ফের মেগানাটক দেখা না তো বাংলা?

ডিসেম্বরে আদৌ কিছু ঘটবে? নাকি শুধু তৃণমূলকে চাপে রাখার কৌশল? ফের মেগানাটক দেখা না তো বাংলা?

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য রাজনীতিতে অন্যতম আলোচিত বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে সামনের ডিসেম্বর মাস। ডিসেম্বর মাসে নাকি এমন কিছু ঘটবে যাতে তৃণমূল সরকার পড়ে যেতে পারে। এই চর্চা বিগত কয়েক মাস ধরেই শুরু হয়েছে। পাল্টা তৃণমূল তার প্রতিক্রিয়াও দিচ্ছে। কিন্তু তৃণমূল যেভাবে বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য রাখছে তাতে বোঝা যাচ্ছে তারা কিছুটা হলেও বিষয়টি নিয়ে ভীত হয়ে পড়েছে। তাই প্রশ্ন, চলতি বছরের শেষ মাসে মেগানাটক দেখা যেতে পারে পশ্চিমবঙ্গে? বিজেপি নেতারা দাবি করছেন ডিসেম্বর মাসে তৃণমূল সরকার নাকি পড়ে যাবে। এটা কি নিছকই ফাঁকা আওয়াজ, নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কিছু?

দুর্গাপুজোর আগে হুগলির একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ডিসেম্বরে রাজ্য সরকার পড়ে যেতে পারে। এমনকী জেলেও যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের কয়েক জনকে বাদ দিলে বাকিরা থাকবেন জেলের ভিতরে। আর মন্ত্রীরাই জেলে চলে গেলে সরকার চলবে কী করে? যথারীতি বিজেপির এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের অভিযোগ মানুষের সমর্থন না পেয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা কাজে লাগিয়ে পশ্চিমবঙ্গে সরকার ফেলে দেওয়ার নোংরা খেলায় নেমেছে বিজেপি। সেই সঙ্গে তৃণমূলের দাবি বিজেপির এই উদ্দেশ্য অবশ্য সফল হবে না। তৃণমূলকে একই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপি নেতা তথা বলিউড স্টার ‘মহাগুরু’ মিঠুন চক্রবর্তীও। তিনি আগের মতোই ফের দাবি করেছেন তাঁর সঙ্গে বহু তৃণমূল বিধায়ক যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তাঁদের মধ্যে যাঁরা ভাল তাঁদের বিজেপি নিতে দ্বিধা করবে না, এমন কথাও শোনা যায় তাঁর মুখে। মিঠুনের এই বক্তব্য সমর্থন করে সুকান্ত মজুমদার এককাঠি উপরে গিয়ে বলেছেন, তৃণমূলের আরও বেশি সংখ্যক বিধায়ক সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে। সবমিলিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তৃণমূল সরকার পড়ে যাওয়া বা তাদের দল ভেঙে যাওয়ার ব্যাপারে কথা বলছেন। এমনিতেই বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ তৃণমূল সরকার। দফায় দফায় রাজ্যজুড়ে টাকার পাহাড় উদ্ধার হচ্ছে। যে ঘটনার জেরে তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য সরকার। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড এমন পর্যায়ে গিয়েছে, যাতে সরকার মুখ লুকোতে পারছে না। তাই বিজেপি যেভাবে তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছে তাতে অনেকেই বিষয়টিকে একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছে না।

এই পরিস্থিতিতে মালদা উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু নতুন করে দাবি করেছেন যে জেলার একাধিক তৃণমূল কাউন্সিলর, বিধায়ক এবং নেতা-নেত্রী বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন। এমনকী তিনি এটাও বলেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তৃণমূলের অনেকেই নাকি যোগাযোগ করছেন। সবমিলিয়ে ঘুরে ফিরে আসছে ডিসেম্বর মাসের কথা।‌ বছরের শেষমাসে কি হয় কি হয় এমন একটা বাতাবরণ কিন্তু ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে রাজ্য জুড়ে। আর তৃণমূলও যে বিষয়টিকে একেবারেই হালকা ভাবে নিচ্ছে না সেটাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। ডিসেম্বর আসতে বেশি দেরি নেই। তাই বড় কোনও নাটক দেখা যায় কিনা তার জন্য কিছু দিন অপেক্ষা করতেই হবে রাজ্যবাসীকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *