নিজস্ব প্রতিনিধি: ১৯৯৮ সাল থেকে গুজরাটে একটানা ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। ডিসেম্বরের শুরুতে যে নির্বাচন হবে সেখানে তারাই ফেভারিট। তা সত্ত্বেও গুজরাট নির্বাচন নিয়ে বিজেপি ভয় কেন পাচ্ছে তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে। আসলে গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস বিজেপির সঙ্গে সমানে টক্কর দিয়েছিল। ১৮২ আসন বিশিষ্ট গুজরাটের ম্যাজিক ফিগার ৯২। সেখানে গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৯৯টি আসনে জিতে কোনও রকমে মুখ রক্ষা করেছিল। পরবর্তীকালে কংগ্রেসের বহু বিধায়ক বিজেপিতে যোগদান করেন।
চিরাচরিত গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেও গুজরাটে সমস্যায় পড়ে কংগ্রেস। কিন্তু তা সত্ত্বেও গত পাঁচ বছরে বিজেপি গুজরাটে একাধিক সমস্যার মুখে পড়ে। আর সেই কারণে তাদের মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত বদল করতে হয়েছে। কিন্তু তাতেও ভরসা পায়নি গেরুয়া শিবির। তাই গত কয়েক মাস ধরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বার বার গুজরাট সফর করেছেন এবং বহু প্রকল্পের উদ্বোধন বা শিলান্যাস করেছেন। বিরোধীদের অভিযোগ প্রধানন্ত্রী প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন বলে গুজরাট ভোটের দিনক্ষণ দেরিতে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এর উপর সদ্য সেতু বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে গুজরাটে। রাজ্যের গ্রামীণ অঞ্চলে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া রয়েছে। এই অবস্থায় গুজরাট নির্বাচনের ঠিক আগে বিজেপি বেশ অস্বস্তিতে রয়েছে। তাই আমজনতাকে খুশি করতে নির্বাচনের আগে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমানোর কথা ভাবছে কেন্দ্র, এমনটাই সূত্রের খবর। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ম মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, পেট্রোপণ্যের পাশাপাশি রান্নার গ্যাসের দামও কমানো হতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন, নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে যাওয়ার পর এভাবে কি জনমুখী সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করতে পারা যায়? সেক্ষেত্রে পাল্টা যুক্তি হচ্ছে পেট্রোল, ডিজেল বা রান্নার গ্যাসের দাম তো শুধু গুজরাটেই কমবে না, সেটি গোটা দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার যদি এই সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সেটি নির্বাচনী আচরণবিধির আওতায় পড়বে না। যদিও এ ব্যাপারে কেন্দ্রের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে এটা পরিষ্কার গুজরাট নির্বাচন নিয়ে বিজেপি যথেষ্ট চাপের মধ্যে রয়েছে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের পাশাপাশি বিজেপিকে বেশ চিন্তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে আম আদমি পার্টি। অরবিন্দ কেজরিওয়াল গত কয়েক মাসে বহুবার গুজরাট সফর করেছেন। দিয়েছেন প্রচুর জনমুখী প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি। তাই কেজরিওয়াল কংগ্রেস না বিজেপি কাদের ভোট কাটবেন, সেই নিয়ে চিন্তায় রয়েছে দু’পক্ষই। আম আদমি পার্টি বিজেপির ভোট যদি একটু বেশি কাটে তাহলে সেখানে ক্ষমতায় আসা মুশকিল হয়ে যাবে পদ্ম শিবিরের। আর এই চিন্তাতেই কার্যত ঘুম ছুটে গিয়েছে মোদি-শাহ জুটির। তাই খাতায়-কলমে ফেভারিট হলেও গুজরাট নির্বাচন নিয়ে বিজেপিতে যথেষ্ট চিন্তায় রয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।