নিজস্ব প্রতিনিধি: নয় বছর আগের একটি বিষয় নিয়ে নতুন করে বাজার গরম করছে বিজেপি। সেটি হল ছবি বিতর্ক। তবে বিজেপি না বলে বলা ভাল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মূলত এই বিষয়টি নিয়ে তিনি রীতিমতো কোমর বেঁধে নতুন করে আসরে নেমে পড়েছেন। যাতে গোটা বিষয়টি সম্পূর্ণ অন্য মাত্রা পেয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ সেই সময় বাংলার জনপ্রিয় এক রাজনৈতিক ব্যক্তির আঁকা একটি ছবি নাকি সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন এক কোটির বেশি মূল্যে কিনেছিলেন। যে অভিযোগ নিয়ে তখন রাজ্য রাজনীতিতে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়।
এমনকী ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে প্রচারে এসে নরেন্দ্র মোদি পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন। যদিও পরবর্তীকালে বিষয়টি নিয়ে আর সেভাবে উচ্চবাচ্য করেনি বিরোধীরা। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নতুন করে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতির ময়দানে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন শুভেন্দু। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, এই বিষয়টি নিয়ে নাকি শীঘ্রই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি তদন্ত করতে চলেছে। আসলে শুভেন্দু যেভাবে তৃণমূলকে বিভিন্ন ইস্যুতে লাগাতার আক্রমণ করছেন, সেটা অন্যান্য বিরোধী নেতা-নেত্রীর ক্ষেত্রে ততটা দেখা যাচ্ছে না। বস্তুত তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণকে শুভেন্দু এমন একটা স্তরে নিয়ে গিয়েছেন যে, যাতে মনে হচ্ছে শাসক দলের সঙ্গে লড়াইটা শুধুমাত্র যেন তাঁরই হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ছবি বিক্রির প্রসঙ্গ তুলে নতুন করে আক্রমণ শানাচ্ছেন তিনি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে ছবি বিক্রি বলতে শুভেন্দু কী বোঝাতে চেয়েছেন? কারণ তিনি সুনির্দিষ্টভাবে এ বিষয়ে কারও নাম করেননি।
যেহেতু সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন, আর সেই সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তাতে ছবি বিতর্ক বিষয়টি নতুন করে সামনে আসায় অস্বস্তি বেড়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। বিজেপি মনে করছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই ইস্যুতে তাদের লাভ হবে ভোট বাক্সে। যদিও এই প্রশ্ন উঠছে যে এতদিন তারা চুপ করে ছিল কেন? শুভেন্দু অধিকারী বিভিন্ন সময় নানা দাবি করছেন। ডিসেম্বরে সরকার পড়ে যাবে বলে দাবি করছেন। তবে কি যে সমস্ত অভিযোগ তিনি করছেন তার স্বপক্ষে তাঁর কাছে জ্বলন্ত কোনও প্রমাণ রয়েছে? এই প্রশ্ন অবধারিত ভাবে উঠছে। তবে যাই হোক না কেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাধারণ মানুষের প্রতিদিনকার সমস্যার কথা প্রচারে তুলে আনার পাশাপাশি এই ছবি বিতর্ক যে বিজেপি প্রবল ভাবে তুলে ধরবে তা স্পষ্ট। গেরুয়া শিবির মনে করছে এই প্রচার তাদের পঞ্চায়েত নির্বাচনে যথেষ্ট ডিভিডেন্ড দেবে। উল্টোদিকে তৃণমূলের দাবি এই সমস্ত ভিত্তিহীন অভিযোগ। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল বিপুল সাফল্য পাবে বলে দাবি করছে তৃণমূল। তাই গোটা বিষয়টি আগামী দিনে কোন দিকে গড়ায় এবং সেটাই দেখার।