নিজস্ব প্রতিনিধি: চলতি বছরে জি-২০ সম্মেলনের সভাপতিত্বের দায়িত্ব পেয়েছে ভারত। এরপর থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টিকে প্রবলভাবে প্রচারের আলোয় তুলে ধরেছে। বিরোধীদের বক্তব্য নিয়ম অনুযায়ী ভারত এই দায়িত্ব পেয়েছে। রোটেশন পদ্ধতিতে ভারতের কাছে এই দায়িত্ব আসবে, এটাই স্বাভাবিক। তাদের অভিযোগ তা সত্ত্বেও বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জি-২০ সম্মেলন ভারত যাতে সাফল্যের সঙ্গে করতে পারে তার জন্য তিনি সকলের কাছ থেকে সহযোগিতা চেয়েছেন। যদিও ভারত যে দায়িত্ব পেয়েছে সেখানে সম্মেলনের লোগোতে দেশের জাতীয় ফুল পদ্মকে স্থান দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীদের অভিযোগ এভাবে বিজেপির প্রতীকটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নিয়ে আসা হয়েছে। যদিও বিজেপি তথা কেন্দ্রের দাবি এখানে কোনও রাজনীতিকে স্থান দেওয়া হয়নি, এটা কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতীক নয়, পদ্মফুলকে রাখা হয়েছে দেশের জাতীয় ফুল হিসেবে। কিন্তু তাতে বিতর্ক থামছে না।
দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে উপস্থিত হয়ে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দল এবং সরকারের পক্ষ থেকে সবরকম ভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। এই উপলক্ষে বিভিন্ন রাজ্যে মোট ২০০টি বৈঠক এবং ইভেন্টের আয়োজন করবে কেন্দ্রীয় সরকার। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি এবং কলকাতাতে চারটি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেই সূত্রে প্রধানমন্ত্রীকে সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন মমতা। তবে বামপন্থী দলগুলি এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জি-২০ এর লোগোতে বিজেপির রাজনৈতিক প্রতীক পদ্মফুল ব্যবহারের বিরোধিতা করা হয়।
কংগ্রেসের তরফে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানায় রেখে দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে দাবি করেছেন, রোটেশন পদ্ধতিতে এমনিতেই জি-২০ সম্মেলনের আয়োজক হতো ভারত৷ এর আগে ইন্দিরা গান্ধী ‘ন্যাম’-এর সভাপতি হয়েছিলেন, দিল্লিতে আয়োজিত ‘ন্যাম’ শিখর সম্মেলনে যোগ দিয়েছিল ১২০টির বেশি দেশ৷ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি জি-২০ শিখর সম্মেলনের আয়োজনের সাফল্যে দেশের মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বের সমস্যা ভুলে না যাওয়ার আবেদন করেন৷ সব মিলিয়ে বিরোধীদের একটাই আবেদন, এই সম্মেলনকে সামনে রেখে বিজেপি যেন রাজনীতি না করে। উল্লেখ্য জি-২০ সম্মেলন আগামী সেপ্টেম্বরে হবে নয়াদিল্লিতে। তার ছয় মাস পরেই হবে লোকসভা নির্বাচন। তাই বিরোধীরা মনে করছে সম্মেলন সফল ভাবে করে সেটিকে লোকসভা ভোটের সময় রাজনৈতিক প্রচারে তুলে ধরবে বিজেপি। তাদের আরও দাবি অতীতে কেন্দ্রের কোনও সরকারই এমন সম্মেলন বা কর্মসূচি আয়োজন করে সেটিকে নিয়ে ঢাক পেটায়নি। কিন্তু যেহেতু জি-২০ সম্মেলনের সঙ্গে ভারতের সম্মানের প্রশ্ন জড়িত, তাই বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে ততটা উচ্চবাচ্য করতে পারছেন না। সব মিলিয়ে জি-২০ সম্মেলন নিয়ে বছর ভর চর্চা যে চলতেই থাকবে তা স্পষ্ট।